চসিকে এবার সচিব পর্যায়ে বড় রদবদল, নাগরিক দুর্ভোগের শঙ্কা
দায়িত্ব পাওয়ার পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তওবা করার নির্দেশ দিয়েই রাজস্ব বিভাগের ২৪ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করেছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এবার প্রতিষ্ঠানটির ওয়ার্ড সচিব পর্যায়ে বড় ধরনের রদবদলের ঘটনা ঘটেছে। তবে দায়িত্ব নেয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে এত বড় রদবদলের ফলে নাগরিক দুর্ভোগ বাড়াবে বলে মনে করছেন অনেকে।
সোমবার (১৭ আগস্ট) চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা সাক্ষরিত এক পত্রে এ আদেশ দেয়া হয়েছে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসকের অনুমোদনক্রমে প্রত্যেক ওয়ার্ডের সচিবদের বদলি করা হয়েছে। এর ফলে সিটি করপোরেশনে ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ১৪ ওয়ার্ডের কোনো ওয়ার্ডের সচিবই তার আগের কর্মস্থলে থাকবেন না। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাশাপাশি ওয়ার্ডের সচিবদের মধ্যে অদলবদল করেই এই রদবদলের আদেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে ৪১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেয়া হয়েছিল চসিকের ৩ কর্মকর্তার মধ্যে। এরপর থেকেই চসিকে নাগরিক সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা করছিলেন নগরবাসী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমনিতেই ওয়ার্ড কাউন্সিলররা নেই, এর ওপর যদি সচিবরাও নতুন হয় তবে ওয়ার্ডের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেবে। ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও জাতীয়তা সনদ দিতে সমস্যায় পড়বে নতুন সচিবরা।
তারা বলছেন, কাউন্সিলররা দায়িত্বে নেই, নতুন সচিরা ওই ওয়ার্ডের মানুষজনকে চিনবে না। কিন্তু তাদেরকে বিভিন্ন সনদ দিতে হবে। ফলে মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি অনেকেরই অপকর্ম করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। অতীতে এভাবেই রোহিঙ্গা ও জঙ্গিরা ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও কাগজপত্র বানিয়ে নিয়েছিল। এখন সেই সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
তবে বদলির কারণে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন চসিক প্রশাসক।
প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘বদলির কারণে কোনো সমস্যা হবে না। সচিবরা মহল্লা কমিটি, স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে বিভিন্ন সনদ দেবেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিয়মিত পর্ষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে হিসেবে ২৯ মার্চ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করে ইসি।
স্থগিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি দলটির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার বদলে নৌকার মনোনয়ন পান নগর কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান দলটির নগর কমিটির সভাপতি শাহাদাত হোসেন।
আবু আজাদ/এফআর