ঈদের শেষ বিকেলে স্বল্পআয়ের মানুষের অন্যরকম মাংসের হাট
একটি ছোট্ট পলিথিনের প্যাকেটে মাংস হাতে দাঁড়িয়ে আছেন দিনমজুর জহুর মিয়া। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আট-দশজন নারী ও পুরুষ। সবার দৃষ্টি তার প্যাকেটের দিকে। ছোট্ট এ প্যাকেটের মাংসের দাম উঠেছে ৪০০ টাকা। কিন্তু জহুর মিয়া ৮০০ টাকার কমে বিক্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
যিনি ৪০০ টাকা দাম বলেছেন তিনি জহুর মিয়াকে বলছিলেন, ‘খাসির মাংস হয়েছে তো কী হয়েছে, ওজন তো আধা কেজির বেশি হবে না, ৮০০ টাকা কেজি দরে দামতো ৪০০ টাকাই হয়।’ জহুর মিয়ার দাবি, ‘এখানে এক কেজির বেশি সলিড মাংস রয়েছে।’
শনিবার (১ আগস্ট) ঈদের দিনের শেষ বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডের অদূরে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বিপরীত দিকের ফুটপাতের পাশে ব্যতিক্রম মাংসের হাটে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জহুর মিয়া জানান, লালবাগের এক ব্যক্তির ছাগল জবাই করে ছিলে কেটে দেয়ার পর তাকে মাংসটুকু খেতে দিয়েছেন। স্ত্রী-ছেলেমেয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ায় তার পক্ষে রান্না করা সম্ভব না। এ জন্য মাংস বিক্রি করে দিতে এসেছেন।
৮০০ টাকায় বিক্রি করতে পারলে আগামীকাল ছেলেমেয়ের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন বলে জানান।
ব্যতিক্রমধর্মী এ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই স্বল্পআয়ের মানুষ। সারাদিন এ বাড়ি-ও বাড়ি থেকে পাওয়া মাংস বিক্রির জন্য প্রতিবছর অন্যরকম এ হাট বসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ রিকশায় করে কেউ পায়ে হেঁটে এ হাটে আসছেন। কেউ ব্যাগে আবার কেউ পলিথিনে করে মাংস বিক্রি করতে নিয়ে আসছেন। কেউবা ভাগা সাজিয়ে বসে আছেন। গরুর মাংস প্রতি কেজি কেউ ৪০০ টাকা কেউ ৫০০ টাকা চাইছেন।
জানা গেছে, অনেক হোটেল ব্যবসায়ী এখান থেকে কম দামে মাংস কিনে মজুত করে পরে তা বিক্রি করেন। আবার স্বল্পআয়ের মানুষ যারা কোরবানি দিতে পারেন না তারা একটু কম দামে পরিবারের সদস্যদের মাংস কিনে নিয়ে যান।
এমইউ/বিএ/পিআর