যাত্রী পেতে শ্রমিকদের হাঁকডাক

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৬ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২০

ঈদ মানে টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ঢল, ঠাসা মানুষে কাউন্টারগুলো থাকে ভরপুর, সড়কে থাকে যানজট। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে এবার ভিন্ন এক ঈদযাত্রা দেখছে যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

চিরচেনা দৃশ্য নেই কল্যাণপুর কিংবা গাবতলী বাস টার্মিনালে। কাউন্টারে গত দু-তিন দিনের তুলনায় যাত্রী বাড়লেও অন্যান্য ঈদযাত্রার তুলনায় খুবই কম। ফলে হাঁকডাকে যাত্রীদের প্রভাবিত করা কিংবা স্ব স্ব কাউন্টারে ডাকতে দেখা যায় পরিবহন শ্রমিকদের।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীরা আসছেন, একটু অপেক্ষা করে বাসে উঠছেন। কাউন্টারে নেই যাত্রীদের ভিড়। অনেকে কাউন্টারে এসে টিকিট কেটেই বাসে উঠছেন।

jagonews24

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্যান্য বার যাত্রাপথে দীর্ঘ যানজটের কারণে বাসের শিডিউল লন্ডভন্ড হয়ে যেত। কিন্তু এবার প্রত্যেক পরিবহনের শিডিউল বাস ছেড়ে যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ে। যে কারণে এবার যাত্রীদের কোথাও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।

কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে কথা হয় আহাদ পরিবহনের সুপারভাইজার চাঁদ আলীর সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের হাসি-কান্না যাত্রীদের নিয়েই। যাত্রী বেশি তো শ্রমিকদের আয়-রোজগার বেশি। কিন্তু করোনায় বাসের যাত্রী অনেক কমে গেছে। ঈদ মানে পরিবহন শ্রমিকদের বাড়তি চাপ, বাড়তি আয়ও। কিন্তু এমন ঈদ কখনো দেখিনি আগে।

jagonews24

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ যাত্রী বাড়লেও তুলনামূলক কমই বলে দাবি করেন অরিন পরিবহনের সুপারভাইজার সুজন।

তিনি বলেন, ঈদ আসলে আমাদের ফুসরত থাকে না। যাত্রীদের পেছনে দৌড়াতে এবং হাঁকডাকও করতে হয় না। কিন্তু এবার যাত্রী কম। আবার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সিট খালি রেখে ভাড়া যা বাড়ানো হয়েছে তাতে লোকসানই। হাঁকডাকে যাত্রীদের অনেকেই ডেকে নিচ্ছেন নিজ নিজ কাউন্টারে। অধিকাংশ পরিবহন মালিক বাস কম চালাচ্ছেন।

গাবতলী ঈগল পরিবহনের কাউন্টার স্টাফ আলী মোহাম্মদ বলেন, যাত্রী না থাকায় অধিকাংশ দূরপাল্লার পরিবহনের ট্রিপ কমে গেছে। যাত্রী হলেই যাচ্ছে বাস।

jagonews24

গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় সারি সারি সাজানো দূরপাল্লার বাস। ব্যাগসহ যাত্রী আসতেই পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে শুরু হয় হাঁকডাক, প্রতিযোগিতা, টানাটানি।

বরিশাল রুটের হানিফ পরিবহনের কাউন্টার স্টাফ আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এবার কপালই খারাপ, একে তো করোনা আতঙ্ক, তার মধ্যে বর্ষার প্রকোপ, কোথাও বন্যা। যে কারণে যাত্রী কমই এবার।

jagonews24

এস আর পরিবহনের বগুড়ার যাত্রী সেলিম রেজা বলেন, ঈদুল ফিতরে তো যেতে পারিনি করোনার কারণে। কিন্তু ঈদুল আজহায় নাড়ির টানে যেতে হচ্ছে বাড়ি।

বরিশাল রুটের শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী মেরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বাড়ি যাচ্ছি এটা ভেবে যেমন ভালো লাগছে তেমনি করোনা নিয়ে শঙ্কাও জাগছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। পথেঘাটে করোনার ভয়ের সঙ্গে বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। তবে ঈদটা ভালোভাবে উদযাপনই লক্ষ্য।

জেইউ/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।