৩ মাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং চান অতিরিক্ত সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৭ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২০

অডিও শুনুন

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ সৎ কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি উইং গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলন। এই উইং তিন মাসের মধ্যে দেশের সব খাতের দুর্নীতি দূর করবে বলেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২৯ জুলাই) জাগো নিউজকে এ কথা বলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর।

মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ছিলেন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। এ সময় তিনি ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তবে হতাশা হচ্ছে ওই জায়গায়, আমরা পারা জিনিস অনেক সময় করি না। পারা জিনিসও অনেক সময় পারব না মনে করে বসে থাকি।’

‘আমি যদি প্রধানমন্ত্রীকে পেতাম তবে বলতাম, স্যার আমাকে ১০ জন অফিসার দিন। এদের আমি চুজ করব, এদের নিয়ে আমি একটা উইং করব। মানুষের চোখের পানি দূর করার জন্য সব মন্ত্রণালয়, সব দফতর, সব অধিদফতরের বিষয়গুলো অ্যাড্রেস করব আমরা এই ১০ জন।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলে আমরা দুর্নীতি দূর করতে পারব না, কেউ যদি বলে সিন্ডিকেট ভাঙা যায় না, আমি ওটারই চ্যালেঞ্জ দিয়েছি— আমার তিন মাস সময়ই যথেষ্ট, যেকোনো ডিপার্টমেন্টের সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য। এনাফ টাইম। দেশের অনেক ডেভেলপমেন্ট আনা যাবে, অনেক পরিবর্তন আনা যাবে। পারা যায়, আমরা পারবই।’

‘করতে না পারলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। এটা আমার খুব ইচ্ছা।’

মাহবুব কবীর বলেন, ‘তবে আমাদের স্বাধীনতা দিতে হবে, জবাবদিহিতা থাকবে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অন্য কারও কাছে নয়। কেন এই কথাটা বলছি- নানা পারিপার্শ্বিকতা আমাদের কাজ করতে দেয় না। নানা কারণে করতে দেয়া হয় না। সেখানে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে, সেখানে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।’

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আমি একটা ১০ জনের প্রতীকী রূপরেখা দিয়েছি। এটা ১৫ জন হতে পারে। অনেক ডেডিকেটেড ছেলে আছে সরকারি চাকরিতে। দশটা সৎ ডেডিকেটেড মানুষকে যদি স্বাধীনতা দেয়া হয় তারা ১০ হাজার জনের কাজ করতে পারবে।’

‘আমাদের অতীতের রেকর্ড তো গৌরবান্বিত। হতাশা তো আমাদের তখনই আসে যখন পারা জিনিস করি না, পারি না বলে বসে থাকি। আর করতে দেয়া হয় না, এটা হলো সবচেয়ে বড় কথা।’

‘আর একটা বিষয় আছে, অনেকে রিস্ক নিতে চায় না। ভাবে, সিন্ডিকেট ভাঙতে যাব, কী দরকার, না জানি কোথায় ঝামেলায় পড়ে যাই।’

সরকারি কর্মকর্তা যারা ভালো, যারা সৎ, তারা অনেক সময় আগ বাড়িয়ে কাজ করতে চায় না— জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (সৎ কর্মকর্তা) নানা সমস্যায় ভোগেন। আমি বিরাগভাজন হবো, আমার প্রমোশন হবে না, আমিও ওএসডি হয়ে যাব— এগুলোর চিন্তা করে।’

‘অনেক সৎ মানুষ ঝামেলায় যেতে চায় না, চুপচাপ থাকে, কোনো ঝামেলা সহজে পছন্দ করে না। কে, কী করে করুক। এটাও কিন্তু আমাদের জন্য ক্ষতিকারক।'

তিনি আরও বলেন, ‘একটা শ্রেণি আছে, লুটপাট করে খাচ্ছে। তারা ভালো কাজ করে না, ভালো কাজ করতে দেয় না। আবার ভালো শ্রেণি, তারা যদি ভয়ে থাকে, ভালো কাজ করতে সংকোচ ফিল করে, তবে তো আমরা দুদিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। এভাবে চললে তো আমরা যত দ্রুত উন্নয়ন চাচ্ছি সেভাবে হবে না।’

আরএমএম/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।