ফুল বিক্রির টাকায় ডান্ডি খায় ওরা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২০

মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন পলাশী বাজারের সামনে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে হইচই ও দৌড়াদৌড়ি করছে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কয়েকজন শিশু-কিশোর-কিশোরী।

বৃষ্টির কারণে বাজারের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা পথচারী ও মার্কেটে আগত ক্রেতা, রিকশাচালকদের দৃষ্টি তাদের দিকে। তারা সবাই উপস্থিত একজনের হাত থেকে একটা পলিথিন কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। হঠাৎ মাঝ থেকে এক কিশোরী ‘পাইছিরে’ বলেই লাফিয়ে ওঠে। হাতের পলিথিনের প্যাকেটটি মুখের বাতাসে ফুলিয়ে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সবাই একই কায়দায় পলিথিন মুখে লাগিয়ে ফুলিয়ে শ্বাস নিতে থাকে। এ সময় চারদিক থেকে দ্রুত গতিতে বাস, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশা ছুটে যাচ্ছে। কিন্তু সেদিকে তাদের একটুও খেয়াল নেই।

বিজ্ঞাপন

jagonews24

এ সময় বৃষ্টিতে যাত্রী নামিয়ে অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা একজন রিকশাচালক তাদের লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে বল ওঠে, ‘ওই ডান্ডিখোরের দল, গাড়ির নিচে পইড়া মরবি, নেশা করবি তো দূরে গিয়া কর।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তাদের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ওইসব শিশু-কিশোর-কিশোরীর হাতে থাকা পলিথিনের ভেতরে হলদে ধরনের একটা বস্তু। পলিথিনে মুখ লাগিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে তারা।

কী করছো– জানতে চাইলে ঢুলু ঢুলু চোখে তাদের মধ্যে থাকা এক কিশোরী জবাব দেয়, ‘এই একটু খাই আর কী’। এই বলেই সে দৌড়ে রাস্তার ফুটপাতে চলে যায়। তার দেখাদেখি অন্যরাও পলিথিনের ব্যাগ হাতে নিয়ে দৌড়ে সেখান থেকে চলে যায়।

jagonews24

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় কয়েকজন দোকানি ও বাসিন্দা জানান, এসব শিশু-কিশোর-কিশোরী ডান্ডি নামক এক ধরনের আঠার নেশায় আসক্ত। পথচারী এ শিশুরা ফুল বিক্রি বা কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করে। এর থেকে যা আয় করে তা এ ডান্ডির আঠা কেনার পেছনে খরচ করে। নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকে রাস্তা ও ফুটপাতে। ডান্ডি দিয়ে শুরু হলেও একটু বয়স বাড়লে ওরা গাঁজাও খায়। এছাড়া হেরোইন ও ইয়াবা সেবনসহ মাদক ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়ে।

এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।