স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম : দোষীদের শাস্তি চায় মহিলা পরিষদ
স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার ফলে সৃষ্ট নৈরাজ্যজনক অবস্থা থেকে উত্তরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সবার জন্য জবাবদিহিমূলক স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি এই খাতের দুর্নীতির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত দোষী ব্যক্তিদের যথোপযুক্ত শাস্তিও দাবি করেছে সংগঠনটি।
শনিবার (২৫ জুলাই) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ন্ত্রিত লুটপাট, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতার কারণে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকটাই ভঙ্গুর। বিশেষত গত কয়েক মাস ধরে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চরম ব্যর্থতা জনমনে তীব্র হতাশা, উদ্বেগ, অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই সংকটের সময়ে যখন চিকিৎসার জন্য হন্যে হয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসকসহ অগণিত মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার নামে চলছে কর্তৃপক্ষের একের পর এক সীমাহীন মিথ্যাচার, দুর্নীতি আর অনিয়ম।
মহিলা পরিষদ এই সকল ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সংবিধান অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘদিনের অদক্ষতা, অব্যবস্থপনা ও অনিয়মের কারণে এই অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি। চরম দুর্নীতির কারণে যথাযথ মাস্ক ও পিপিই না পাওয়ায় প্রাণ দিতে হয়েছে কর্তব্যরত বহু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অনেক প্রতিশ্রুতি শীল চিকিৎসককে, যা দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
মহিলা পরিষদ মনে করে, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুষ্ঠু জবাবদিহিমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থ্যাপনা অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। দেশের জনসংখ্যা, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে সৃষ্ট সুযোগের সদ্ব্যবহার, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল তৈরীর লক্ষ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য খাতে নিয়মিত অডিটের পাশাপাশি প্রয়োজন সমন্বয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্রয় প্রক্রিয়া, প্রকল্প ব্যবস্থাপনাসহ সকল ক্ষেত্রে নিবিড় মনিটরিং। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, সকল হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমএ) চিকিৎসকদের অন্যান্য সকল সংগঠনকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার এবং যথার্থ ভূমিকা রাখার দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করি সরকার স্বাস্থ্যখাতসহ সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
জেইউ/এমএসএইচ