যানজট আর ঘিঞ্জির নবাবপুরে থৈ থৈ পানি
প্রবল বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তাঘাটের ছবিতে ফেসবুক ছেয়ে গেছে। বেশিরভাগ ছবিতেই দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তায় গাড়ি ভেসে যাওয়ার মতো অবস্থা। আবার কোথাও কোথাও তীব্র যানজট, গাড়ি নিশ্চল অবস্থায় পড়ে আছে। বাস-গাড়ি-রিকশা অর্ধেক ডুবে আছে পানিতে। রিকশা আরোহীরা পা উপরে তুলে রেখেছেন।
কোনো কোনো সড়কে পানির ওপর দিয়েই নৌকার মতো গাড়ি চলছে। পানির ওপর দিয়ে ছুটে চলাকে কেউ কেউ বলছেন, ‘সার্ফিং।’ কেউ বলছেন, ‘পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তা দেখে বোঝার উপায় নেই রাস্তা না নদী।’
কেউ কেউ বলছেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে তারা শহরের একই জায়গায় গাড়িতে কয়েক ঘণ্টা আটকা পড়ে আছেন।
সোমবার রাতে-মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরের কিছু আগ পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিতে শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট- অলিগলি পানির নিচে তলিয়ে যায়।
জল ও যানজটে নাকাল বাসিন্দাদের অনেকে এই পরিস্থিতির জন্য নগর কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন। রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো বৃষ্টির পানির ভয়াবহ চিত্র ইলেকট্রিক ও হার্ডওয়্যার সামগ্রীর পাইকারি মার্কেট নবাবপুর রোডজুড়ে।
জানা গেছে, ৫০ হাজারের বেশি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে। দিনভরই থাকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতার উপস্থিতি। সঙ্গে যানবাহনের চাপ। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় এ বাণিজ্যিক এলাকায়। তবে ভালো নেই এখানকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। নানা নাগরিক সমস্যায় জর্জরিত তারা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত এ এলাকায় বড় সমস্যা ভারী বর্ষণেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট।
এমনিতেই যানজট আর ঘিঞ্জি পরিবেশ রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা নবাবপুর। এর মধ্য দিয়েই লাখো মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে প্রতিদিন। বৃষ্টির পর সূর্য উকি দিলেও বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কাপ্তানবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে শুরু করে নবাবপুর রোড-রায়সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত রাস্তাঘাট পানিতে থৈ থৈ। এখানে-সেখানে অলি- গলি বাড়ির গেটে জমে আছে পানি।
গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিতে পানি জমে গেছে। বেলচা দিয়ে সেই পানি সেচে ফেলছেন দোকানিরা। নবাবপুরের গ্ল্যাস ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শামসুদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে রাস্তায় টুকটাক কিছু সংস্কারকাজ হয়েছে। কিন্তু অল্প বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। বৃষ্টি হলেই বেলচা দিয়ে পানি সেচে ফেলতে হয়।
বিসিসি রোড, নবগ্রাম, কাপ্তানবাজারের অলিগলিতে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী থেকে শুরু ইলেকট্রিক মালপত্র। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় নবাবপুরের প্রবেশদ্বার। মাওয়া রুটে চলাচলকারী বাসগুলো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে।
নবাবপুরের ব্যাবসায়ী আলী আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, নবাবপুর রোড নগর ভবনের খুব কাছে হলেও পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। রাস্তাজুড়ে ময়লার স্তূপ। ডাস্টবিন দু-একটি যা আছে তাও ভাঙাচোরা। মূল সড়কের ওপর রয়েছে তিনটি ময়লার ভাগাড়। কনটেইনার উপচে পড়ছে এসব ভাগাড়ের ময়লা। এর মধ্যেই অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তার ওপর বেশি বৃষ্টি হলেই শুরু হয় আমাদের দুর্ভোগ।
এফএইচ/জেডএ/এমএস