দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি, ভোগান্তিতে নগরজীবন
অডিও শুনুন
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ চলছে। সকাল থেকে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) সকাল ৬টার আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাতে ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর কোথাও কোথাও জলাবদ্ধ রাস্তা, ঝরছে বৃষ্টি, সেই সঙ্গে নেই পর্যাপ্ত গণপরিবহন। সবমিলিয়ে কাজে বের হয়ে নগরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল সোমবারও বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে, মূল সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। এতে করে সকালে থেকে দুর্ভোগে পড়েছেন কাজে বের হওয়া মানুষরা। অনেক স্থানে রাস্তা ও ফুটপাত তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হয়। আজও রাজধানীর কিছু কিছু সড়কে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বর্ষা বা বৃষ্টি মানেই রাজধানীবাসীর কাছে জলাবদ্ধতা একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার নাম। বিশেষ করে রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, পুরান ঢাকা, খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। তবে আজ জলাবদ্ধতার চেয়েও বেশি ভুগিয়েছে বৃষ্টি। এতে করে নগরজীবনে স্বাভাবিক চলাচলের ছন্দপতন হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী সাব্বির আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে কাজে বের হয়ে বিপড়ে পড়েছি। টানা বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই সঙ্গে নেয় পর্যাপ্ত গণপরিবহন। অনেক জায়গায় ফুটপাতও তলিয়ে ছিল। রাজধানীতে প্রতিবছর যদি একইভাবে জলাবদ্ধতা হয় তাহলে সেবা সংস্থাগুলো কি করে? এর একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া উচিত। গতকাল আরও বেশি জলাবদ্ধতা ছিল, ঢাকা শহরের রাস্তা-ঘাট দেখে মনে হচ্ছে সড়কেই যেন নদীর ঢেউ সৃষ্টি হয়েছে!
আরেক পথচারী জামিলুর রহমান বলেন, টানা বৃষ্টিতে মিরপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যখন বাস আসছে তখন মনে হচ্ছে এটা কোনো সড়ক নয় যেন নদী। প্রতিবার এমন জলাবদ্ধতা হয় কিন্তু নাগরিক সমস্যা সমাধানে কেউই কাজ করে না। আজ সারাদিন বৃষ্টি, সড়কে পানি জমাট, এর মধ্যে আবার গণপরিবহনও কম। সবমিলিয়ে সারাদিন ধরে রাজধানীবাসী ভোগান্তিতে দিন পার করছে।
মঙ্গলবার ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে, যা দমকা আকারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পযর্ন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮৭ মিলিমিটার।
অন্যদিকে আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এএস/এমএসএইচ/পিআর