লঞ্চডুবির পর আত্মগোপনে চলে যান মাস্টার বাসার
বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় ৩৪ জনের প্রাণহানি দেশ-বিদেশে চাঞ্চল্য ছড়ায়। সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় মর্নিংবার্ড লঞ্চ। তারপর থেকে আত্মগোপনে চলে যান অভিযুক্ত ময়ূর-২ লঞ্চের মাস্টার আবুল বাসার। নিজের গ্রেফতার এড়াতে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
শেষমেশ র্যাবের হাতে ধরা পড়েন তিনি। রোববার (১২ জুলাই) রাতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে র্যাব-১০-এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।
সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেনে তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র্যাব-১০-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, গ্রেফতার ময়ূর-২ লঞ্চের মাস্টার আবুল বাসার মোল্লা (৫৭) মাগুরার মোহম্মদপুর থানার মন্ডলগাতির কলাগাছি গ্রামের মৃত সিরাজুল হক মোল্লার ছেলে।
অতিরিক্ত ডিআইজি কাইয়ুমুজ্জামান খান বলেন, ‘ঘটনার পর আবুল বাসার আত্মগোপনে চলে যান। বাসার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে আসছিলেন। ঘটনার দিনই তিনি মাগুরায় নিজ গ্রামে চলে যান এবং রাতের খাবার খেয়ে পাশের একটি গ্রামের একজনের বাড়িতে রাত্রীযাপন করেন।’
‘পরেরদিন ফরিদপুরে আলফাডাংগা চলে যান। সেখানে দুইদিন অবস্থান করার পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার আখালিপাড়ায় তার ভায়রার বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে তিনি ঢাকার দিকে আসছিলেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তার অবস্থান নিশ্চিত করে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
গ্রেফতার আসামি বাসারকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান র্যাব-১০-এর অধিনায়ক।
গত ২৯ জুন সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা দোতলা ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চটি সদরঘাট কাঠপট্টি ঘাটে ভেড়ানোর আগ মুহূর্তে চাঁদপুরগামী ‘ময়ূর-২’ লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চডুবির ওই ঘটনায় ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএল মনিং বার্ডকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়ার সময় ‘ময়ূর-২’ এর মূল মাস্টার নয়-এমন একজন শিক্ষানবিশ চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া লঞ্চের কোনো ত্রুটি নয়, মাস্টারের ভুলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
লঞ্চডুবির ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে সাতজনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন-এমভি ময়ূর-২ এর মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদ, লঞ্চের মাস্টার আবুল বাসার মোল্লা ও জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার ও শাকিল হোসেন এবং সুকানি নাসির মৃধা ও মো. হৃদয়।
জেইউ/এসআর/এমকেএইচ