৫৬৪ স্থাপনায় এডিসের লার্ভা, ১৪ লাখ টাকা জরিমানা
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে দ্বিতীয় দফা পরিচ্ছন্নতা অভিযান (চিরুনি অভিযান) পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
ডিএনসিসির চিরুনি অভিযানে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬ দিনে মোট ৭৯ হাজার ৪৪০টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৫৬৪টিতে এডিসের লার্ভা এবং ৪৮ হাজার ১৩৫টিতে এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এই কয়দিনে ১০৮টি মামলায় মোট ১৪ লাখ ২ হাজার ৩১০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ডিএনসিসির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১০ দিনব্যাপী এ অভিযান শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচালিত হচ্ছে। চিরুনি অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে, অর্থাৎ ১০টি সাব-সেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রতিটি সাব-সেক্টরে ডিএনসিসির ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১ জন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করছেন। চিরুনি অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির ৩ জন কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৯ জন কীটতত্ত্ববিদ এবং ৬ জন চিকিৎসক ডিএনসিসির সাথে কাজ করছেন।
চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতে তাদেরকে মনিটর করা হবে।
এর আগে প্রথম পর্যায়ে গত ৬ জুন থেকে ১০ দিনের চিরুনি অভিযান পরিচালিত হয়। সেই অভিযানে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩৫টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ১ হাজার ৬০১টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৮৯ হাজার ৬২৬টি বাড়ি-স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। অর্থাৎ অভিযানে দেখা গেছে, ডিএনসিসির শতকরা প্রায় ৬৭ ভাগ স্থাপনায় এডিসের বংশবিস্তারের উপযোগী পরিবেশ বিরাজমান এবং শতকরা প্রায় ১.২ ভাগ স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। সে সময় ডিএনসিসির ১০ দিনের চিরুনি অভিযানে ১ হাজার ৬০১টি স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ২৪ লাখ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছিল।
এএস/এমএসএইচ/এমএস