বড় ভাইয়ের নির্দেশেই তাবেলাকে হত্যা


প্রকাশিত: ০৬:৩৬ এএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

কথিত এক বড় ভাইয়ের নির্দেশেই ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, তাবেলাকেই হত্যা করা হবে এমন টার্গেট ছিল না। টার্গেট ছিল যেকেনো সাদা চামড়ার বিদেশি নাগরিক হত্যা। ওই কথিত বড় ভাইয়ের উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। ওই কথিত বড় ভাইকে খুঁজে বের করার চেষ্টাও চলছে।

সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে গুলশানে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যায় গত রোববার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সন্দেহভাজন ৩ জনসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে বলে জানান তিনি।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল ওরফে বিদ্যুত রাসেল, মিনহাজুল আরিফিন রাসেল ওরফে ভাগিনা রাসেল ওরফে কালা রাসেল, তামজিদ আহমেদ রুবেল ওরফে মোবাইল ওরফে শুটার রুবেল এবং শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরীফ।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে তাবেলা সিজার হত্যার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেয়া হয়। সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। মামলার গুরুত্ব অনুযায়ী তদন্তের ভার নেয় মহানগর ডিবি পুলিশ।

এরপর সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ জড়িত অভিযোগে ওই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে মোশাররফ বাদে বাকি তিনজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। মোশাররফ তাদের মোটরসাইকেল সরবরাহ করে।

কমিশনার বলেন, এক কথিত বড় ভাই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একজন বিদেশি নাগরিককে হত্যার নির্দেশ দেন।  

মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ইতালিয়ান তাবেলা সিজার হত্যার পর আইএস এর পক্ষ থেকে দায় স্বীকারের খবর দেয় সাইট ইন্টেলিজেন্স নামক একটি আমেরিকান সাইট। আমরা ঘটনার পর তাদের সঙ্গে যোগযোগ করেছি। কিন্তু আইএস যে ধরনের তৎপরতা তাতে এ ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক তাদের নেই। তারাও তথ্য দিয়ে আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে আইএস কিংবা কোনো জঙ্গি সংগঠন জড়িত নয়। বরং আইএস’কে সামনে এনে মূল অপরাধ ও অপরাধীদের আড়াল করার কৌশল নেয়া হয়েছে।

কমিশনার বলেন, হোসনি দালান ও এএসআই হত্যার সঙ্গে আলাদা গোষ্ঠী জড়িত। তাবেলা সিজার হত্যায় আরেক গোষ্ঠী। যারা ৯২ দিন কথিত অবরোধের নামে বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে বাস পুড়িয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে তাদের সংশ্লিষ্টতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বলা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মদদে বিদেশি হত্যাকাণ্ড। ওই কথিত বড় ভাইয়ের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত কি হওয়া গেছে? জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, আমরা ওই কথিত বড় ভাইকে খুঁজছি। তার রাজনৈতিক পরিচয় আমরা এখনো নিশ্চিত নই। যেভাবে তদন্ত চলছে তাতে খুব দ্রুব তার রাজনৈতিক পরিচয় জানা যাবে।

কমিশনার বলেন, কথিত বড় ভাইকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তার পেছনে আর কোন মাস্টারমাইন্ড রয়েছে। তাও আমরা বের করবো।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে মামলার তদন্ত প্রভাবিত হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে। আমরা রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো তদন্ত করি না।

যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, সাইট ইন্টেলিজেন্স কোন তথ্যের ভিত্তিতে কেন আইএস সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রচার করেছে এবং তাদের সঙ্গে মূল হত্যাকারীদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান ও মো. দিদার আহম্মদ, যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মীর রেজাউল আলম, যুগ্ম কমিশনার (অপস) কৃঞ্চ পদ রায়, ডিএমপি’র উপ-কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম।

জেইউ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।