দেশের নামে বিদেশি সংস্কৃতির বিলাসবহুল আয়োজন
৩১ অক্টোবর মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি স্টুডেন্ট নাইট (বিএসএন)।তৃতীয় বারের মত জাকজমকপূর্ণ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে সমান তালে। এ অনুষ্ঠান নিয়ে সুবিধাগ্রহণকারীদের বিশেষ প্রচারণা থাকলেও অধিকাংশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এটিকে বয়কট করেছে। অনুষ্ঠানটি মূলত ভারতীয় সংস্কৃতিকেই বহন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে শুরু হয় বাংলাদেশ স্টুডেন্ট নাইটের যাত্রা। মালয়েশিয়ার মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হলে পর্দা উঠে এর প্রথম আসরের। সেই সময়ে উশৃঙ্খলতার জন্য কঠোরভাবে সমালোচনার মুখোমুখি হয় অনুষ্ঠানটি।
বিদেশের মাটিতে দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে না পারলেও আবর্জনার দুর্নাম কুড়িয়েছিল অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানের পর প্রতিবারই অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার অভিযোগ পাওয়া যায় বিশবিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীর পক্ষ থেকে- যা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এছাড়াও পুরো অনুষ্ঠানে দেশীয় সংস্কৃতিক চর্চার নামে শোভা পায় ভারতীয় সংস্কৃতি। সঙ্গে থাকে পশ্চিমের প্রভাব। এর প্রভাবে মালয়েশিয়ায় এখন অনেকেই ভারতীয় হিন্দি সংস্কৃতিকেই বাংলাদেশি সংস্কৃতি হিসেবে ভেবে বসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএন পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য এ প্রতিবেদককে বলেন, সবাই চায় বাংলাদেশকে নিয়ে এরকম বড় অনুষ্ঠান হোক। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের দিকের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থের বিবেচনা করেই আয়োজন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ান স্টুডেন্ট নাইট, জাপানিজ স্টুডেন্ট নাইট, কোরিয়ান স্টুডেন্ট নাইটও আয়োজন হয়ে থাকে। তবে বিএসএন’এর মতো এতো বিলাস বহুলভাবে অনুষ্ঠানের কোন প্রয়োজন নেই। আর হলেও, বেশির ভাগ থাকে পশ্চিমা নাচ এবং ভারতীয় সংস্কৃতির যোগফল।
অনুষ্ঠানের মূল পরিচালক মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাশিক হায়দারের নামেও রয়েছে শিক্ষার্থীদের বিস্তর অভিযোগ। তার একক নির্দেশনায় চলে এই অনুষ্ঠান। কোন বিষয়ই কারো পরামর্শ নিতে নারাজ তিনি। অনুষ্ঠানে বিদেশি সংস্কৃতির প্রচারণা তার পরামর্শেই হয়ে থাকে। এবারের আসরেও পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রাধান্য বেশি। আরো বড় আকারে বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় এবার মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ান তুনকু চ্যান্সেলরের প্রধান হলে আয়োজন করা হচ্ছে এর তৃতীয় আসর। প্রায় ১০ লাখ টাকা এবারের বাজেট ধার্য করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জেডএইচ/এমএস