১২ বছর ধরে বিশেষজ্ঞ হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছেন হেকিম মিজানুর
ইউনানি হেকিম হিসেবে চিকিৎসার জন্য রয়েছে সাময়িক সনদ। কিন্তু তাতে কী! তিনি কখনও লিভার বিশেষজ্ঞ, কখনও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। নামের পাশে আরও যুক্ত পিএইচডি, এমফিলসহ নানা ডিগ্রি। নিজেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়েই গত ১২ বছর ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। রাজধানীর মতিঝিল ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বসেই তিনি এই জালিয়াতি করে আসছিলেন।
তবে শেষরক্ষা হয়নি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার দুপুরে হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে মো. মিজানুর রহমান নামে ওই ভুয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে আটক করে র্যাব। পরে র্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
সাথে সাথে হাসপাতালটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারভাইজার মো. হাসিনুর রহমানকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, করোনাকালীন হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন অনিয়মের খবর পাওয়া যায়। এ সুযোগে ভুয়া চিকিৎসকদের অপতৎপরতা নজরদারি করছেন গোয়েন্দা সদস্যরা।
তিনি আরও বলেন, ভুয়া চিকিৎসক থাকাসহ বেশকিছু অভিযোগের ভিত্তিতে দুপুর ১২টায় র্যাব-৩ এর সহযোগিতায় মতিঝিলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, চিকিৎসা দেয়ার জন্য তার টেমপোরারি (সাময়িক) রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। সেটাও শুধু ইউনানি চিকিৎসার ক্ষেত্রে। কিন্তু এলোপ্যাথির চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন মিজানুর রহমান।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বলেন, তিনি মূলত ইউনানি চিকিৎসক। তার প্যাডে এলোপ্যাথি চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি নিজেকে হেকিম নয়, ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি অসংখ্য ভুয়া ডিগ্রি তার প্রেসক্রিপশনে যুক্ত করেছেন। যার কোনো সত্যতা ও ভিত্তি নেই। শুধু প্রতারিত করতেই তিনি ভুয়া ডিগ্রিযুক্ত করেছেন। এতে করে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য, অর্থের তিনি ক্ষতিসাধন করেছেন। এর কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
এ কারণে ভুয়া চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি এমন ভুয়া চিকিৎসককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রচার ও চেম্বারে বসার সুযোগ দেয়ায় হাসপাতালটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারভাইজার মো. হাসিনুর রহমানকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। সর্বশেষ হাসপাতালটির ফার্মেসিতে অভিযান চলছিল।
জেইউ/বিএ/এমএস