শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত আত্রাইয়ের ব্যবসায়ীরা


প্রকাশিত: ১০:৪০ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

মৎস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তর জনপদের স্থানসমূহের মধ্যে একটি নওগাঁর আত্রাই। এ বছর নদীর পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে দেশি প্রজাতির নানান মাছ। শুঁটকি তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আত্রাইয়ে শুটকি ব্যবসায়ীরা। এলাকাজুড়ে এখন চলছে মাছের শুঁটকি তৈরি। গত কয়েক বছরে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার তা পুষিয়ে নিতে কোমর বেঁধে শুঁটকি তৈরিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

এবার বন্যায় এলাকার বিভিন্ন পুকুর ডুবে যাওয়ায় নদীতে দেশী মাছের বিচরণ অনেক বেড়ে গেছে। তাই জেলেরা নদীতে উৎসাহ নিয়েই মাছ ধরছেন। ধরাও পড়ছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন রকম মাছ। আর এ মাছগুলো প্রতিদিন ভোর থেকে বিক্রি হচ্ছে আত্রাই আহসানগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী বাজার মাছের আড়ৎতে। ব্যবসায়ীরা দেশি মাছ বিশেষ করে পুঁটি, রাইখোর, চাঁন্দা, টাকি, শোল, বোয়াল মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার আত্রাই উপজেলা থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিন শতশত টন মাছ বাজারজাত করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের প্রায় ২০টি জেলায় বাজারজাত হয় আত্রাইয়ের শুঁটকি। আর এ মাছের শুঁটকি তৈরি করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছে প্রায় শতাধিক পরিবার।


উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুঁটকি তৈরিতে বিশেষভাবে খ্যাত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হতো। আর এ অর্থ দিয়ে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণ নিশ্চিত করতো। কিন্তু গত বছর বাজার মন্দা থাকায় এসব ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কাঁচা মাছের আমদানি কম, বাজারে মূল্য বেশি থাকায় শুঁটকির বাজারে নেমেছিল ধস। সব কিছু মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের গত বছর লাভের পরিবর্তে গুণতে হয়েছিল লোকসান। বর্তমানে মাছের ব্যাপক আমদানি, মূল্য কম এবং শুঁটকির বাজার মূল্য বেশি থাকায় ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে আন্দের উচ্ছ্বাস।

ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী মঞ্জুর মোল্লা জানান, গত বছর প্রতি চালানেই লোকসান গুণতে হয়েছিল। শুটকি তৈরির আসল টাকাই উঠে আসেনি। এবছর কাঁচা মাছের চাহিদা বেশি, দাম কম থাকায় শুঁটকিতে লাভ ভালো থাকবে।

ব্যবসায়ী মাজেদুল জানান, পরিবার পরিজন নিয়ে শুটকি তৈরি করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্রাইয়ের শুঁটকির চাহিদা আছে। তিন মন মাছ শুকালে এক মনের মতো শুটকি হয়। মাছ শুকানো মানেই মানুষ শুকানো। এটা খুব কষ্টের কাজ। তবে লাভ ভালো হলে সব কষ্ট লাঘব হবে।

আব্বাস আলী/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।