বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে ঘের করা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ২১ জুন ২০২০
ফাইল ছবি

বাঁধ রক্ষায় উপকূলীয় এলাকায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের করা যাবে না।

উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি/কাঁকড়া ঘেরের অভিঘাত থেকে বাঁধ রক্ষায় বাঁধ থেকে চিংড়ি ঘেরের এ দূরত্ব নির্ধারণ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়কালে আইলা, সিডর, ফণী, বুলবুল ও আস্ফানের মত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে বা হচ্ছে এবং এ এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ ভৌত ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছে।

এতে বলা হয়, এ এলাকাগুলোতে লবণাক্ত পানি অনুপ্রবেশ তথা লবণাক্ত পানির ক্ষয়ক্ষতি থেকে ফসলাদি রক্ষার্থে ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ষাটের দশকে পোল্ডার/বাঁধ ও আনুষাঙ্গিক স্থাপনাসমূহ নির্মাণ করে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ সত্ত্বেও ঘনঘন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট অতিরিক্ত প্রবল পানির স্রোতের কারণে পুরনো এ গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলোর বিভিন্ন অংশ বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ওভারট্যাপিং, সিপেজ, রিভার ইরোশনসহ অন্যান্য কারণে বাঁধগুলো প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

‘উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বাপাউবোর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিমত অনুসারে- বাঁধের টো ঘেঁষে বা বাঁধের অত্যন্ত কাছে চিংড়ি/কাঁকড়ার ঘের তৈরি করে স্থানীয়রা কাঁকড়া/চিংড়ি মাছ চাষ করছে। ঘের মালিকরা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র পাইপ ঢুকিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নিজস্ব সুবিধা অনুসারে গেট তৈরি করে পানি ঘেরে প্রবেশ করিয়ে থাকে। ফলে বাপাউবোর বাঁধগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বড় ধরনের জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধের বিভিন্নস্থান ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ ও ঘেরের ক্ষতি সাধিত হয়।

উল্লেখ্য, চিংড়ি এ এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এছাড়া হিমায়িত চিংড়ি দেশের উল্লেখযোগ্য একটি রফতানিমুখী পণ্য। তাই চিংড়ি চাষাবাদকেও সংরক্ষণ করা দরকার।’

এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ঘের স্থাপনের সময় পাউবোর বেড়িবাঁধ বাঁধ থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে ঘেরের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। পানি প্রবেশ/পানি নিষ্কাশনের জন্য নিকটস্থ নদী বা কাছাকাছি খালের ইনলেট/আউটলেট তৈরি করে চাষাবাদ বা ঘের ব্যবস্থাপনা করতে হবে।

সমগ্র বিষয়াদি একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার জন্য জেলা সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি ‘বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩’ অনুসারে চিংড়ি ঘের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য যে, ‘বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩’ এবং ‘পানি বিধিমালা, ২০১৮’ অনুসারে গঠিত জেলা সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্ম-পরিধির আওতাভুক্ত এবং এ কমিটির সভাপতি সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক বলে জানানো হয় চিঠিতে।

আরএমএম/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।