টাকার জন্যই ব্যবসায়ী বন্ধুকে কেটে তিন টুকরো

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৭ পিএম, ২০ জুন ২০২০

রাজধানীর উত্তরাসহ তিন জায়গা থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের (২৬) খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতার দুজন হলেন- নিহত হেলালের বন্ধু চার্লস রূপম সরকারের স্ত্রী শাহীনা আক্তার ওরফে মনি সরকার (২৪) ও রূপমের শাশুড়ি রাশিদা আক্তার (৪৮)।

রাজধানীর উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুর থেকে গ্রেফতারের পর তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তারা।

স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিল হত্যার নেপথ্যের কারণ। তবে এখনও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রূপম পলাতক। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ জুন হেলাল নামে ওই তরুণ ব্যবসায়ীর মরদেহের দুই অংশ দক্ষিণখান ও বিমানবন্দর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন দক্ষিণখানের একটি খালি প্লট থেকে উদ্ধার করা হয় হেলালের মাথা। ওই ঘটনার পরদিন হেলালের বড় ভাই মো. হোজায়াফা বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।’

এই মামলার তদন্তে গিয়ে গত ১৫ জুন হেলালের খণ্ডিত দেহ বস্তায় ভরে নিয়ে একটি অটোরিকশায় উঠছিল রূপম, এমন ফুটেজ আসে গোয়েন্দাদের হাতে। সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করেই রূপমের স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়। মনি ও তার স্বামী রূপম মিলে হেলালকে হত্যার পর তার লাশ তিন টুকরো করে বস্তায় ভরে ঢাকার তিন জায়গায় ফেলে দিয়েছিল।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে ডিসি মশিউর বলেন, ‘আজমপুর মধ্যপাড়া মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে হেলালের ছিল বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের দোকান। বসবাস করতেন দক্ষিণখানে। দুই বছর আগে বাংলালিংকের সিম বিক্রির সুবাদে পরিচয় হয়েছিল রূপম ও তার পরিবারের সঙ্গে।’

‘গত ১৪ জুন দুপুরে লাখ টাকার বেশি দামের একটি ফটোস্ট্যাট মেশিন বিক্রির জন্য দক্ষিণখানের মোল্লারটেকে নিজ বাসায় রূপম হেলালকে ডাকেন। ছোট দোতলার ওই বাসায় যাওয়ার পর হেলালকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় রূপম। চা খাওয়ার পর হেলাল অচেতন হয়ে পড়ে। তখন রূপম ও মনি হেলালকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ বাথরুমে নিয়ে যায়। চাকু ও বঁটি দিয়ে তিন টুকরা করে বস্তায় ভরে পরদিন সকালে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রূপম।’

হত্যার কারণ সম্পর্কে তারা জানিয়েছে, হেলালের কাছে বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের অনেক টাকা রয়েছে এমন ধারণা থেকেই তাকে হত্যা করে রূপম-মনি।

ডিসি বলেন, ‘কিন্তু হেলালের কাছে তারা নগদে পায় মাত্র ২৫৩ টাকা। পরে তার বিকাশের মোবাইলফোন থেকে কৌশলে ৪৩ হাজার টাকা তারা উঠিয়ে নেয়।’

নিহত হেলালের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া অর্থ পাওয়া এবং আসামিদের পালাতে সহযোগিতা করায় রূপমের শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়।

জেইউ/এফআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।