বুক ভরে শ্বাস নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুটে আসছে নগরবাসী
হঠাৎ দেখলে মনে হবে চোখের ভুল। শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘর ও গ্লাস টাওয়ার সংলগ্ন লেকের পাড়ে বসে আছে অসংখ্য মানুষ। আশপাশের সবুজ ঘাসের মাঠে ঘোরাফেরা করছেন অনেকে। কেউবা শিশুদের নিয়ে এদিক-সেদিকে হাঁটাহাঁটি করছেন। উদ্যানের মুক্তমঞ্চের চারপাশেও বসে খোশগল্প করছেন অনেকে।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। এমন এক পরিস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি অনেকটা চমকে দেয়ার মতো ঘটনা। বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই উদ্যানে অবাধ প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দুই মাসেরও বেশি সাধারণ ছুটি থাকার সময় উদ্যানে সব দিকের প্রবেশপথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি উদ্যানের ভেতর কালীমন্দিরে পূজা-অর্চনা করতেও কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ওই সময় গোটা উদ্যান ছিল জনমানবশূন্য, চারদিকে সুনসান নীরবতা।
জানা গেছে, চলতি মাসের শুরু থেকে সীমিত আকারে উদ্যানের দু-একটি গেট খোলা হয়। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে এখনও প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্যান পানে ছুটে আসে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে আসেন সৌরভ আলম। তিনি জানান, ঘরে বন্দি থেকে থেকে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাইরে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। তাই আজ ওদের এখানে বেড়াতে নিয়ে আসলাম। সবুজে ঘেরা মাঠ, লেকের টলটলে স্বচ্ছ পানি ও নানা রঙের ফুলের সমারোহ দেখে ওরা ভীষণ খুশি বলে জানান তিনি।
লেকের পাড়ে বসে পানকৌড়ির ডুব-সাঁতার দেখছিলেন লালবাগের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রহমত মিয়া। তিনি বলেন, ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। বিকেল ৪টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। কয়েক দিন ধরে তিনি দোকান বন্ধ করে উদ্যানে ঘুরতে আসেন। উদ্যানে সবুজ গাছপালা গাছে গাছে ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য দেখলে মনটা ভালো হয়ে যায় বলে জানান।
এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ