করোনা শনাক্তে গণস্বাস্থ্যের কিট কার্যকর নয় : বিএসএমএমইউ ভিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ১৭ জুন ২০২০

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিট (র‌্যাপিড ডট ব্লট) কার্যকর নয় বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেছেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের রোগ শনাক্তকরণের গণস্বাস্থ্যের কিট কার্যকরী নয়। তিনি বলেন, উপসর্গের প্রথম দুই সপ্তাহে (তাদের) কিট ব্যবহার করে শুধুমাত্র ১১ থেকে ৪০ শতাংশ রোগীর করোনা শনাক্তকরণ সম্ভব।

বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে বিএসএমএমইউর মিল্টন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্যের কিটের কার্যকারিতা সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য।

এর আগে সকালে গণস্বাস্থ্যের কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষায় অধ্যাপক শাহিনা তাবাসসুমের নেতৃত্বে গঠিত পারফরম্যান্স কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনা শনাক্তে রেপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবনের পর ২৬ এপ্রিল তা হস্তান্তরের আয়োজন করে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান তা গ্রহণ করতে যায়নি। এই কিটের অনুমোদন দেয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সরকারের ওষুধ প্রশাসন। তখন তারা বলেছে, সিআরও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (মধ্যস্বত্বভোগী) কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার পর তা তারা অনুমোদন দেবেন।

তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, কোনো মধ্যস্বত্বভোগী সিআরও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন না। তিনি সরকারের বিএসএমএমইউসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাতে চান। তবে ওষুধ প্রশাসন বলে আসছিল, সিআরও প্রতিষ্ঠান ছাড়া কিটের কার্যকারিতা যাচাইয়ের সুযোগ নাই।

এরকম পরিপ্রেক্ষিতে নানা আলোচনা-সমালোচনার একপর্যায়ে ওষুধ প্রশাসন বিএসএমএমইউতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তাদের কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমোদন দেয় ২৯ এপ্রিল। অনুমোদনের বেশকিছু দিন পর গণস্বাস্থ্য কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরু হয় বিএসএমএমইউতে। এর মধ্যে গত ২ জুন যথাযথভাবে লালা সংগ্রহ সম্ভব না হওয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের দুটি অংশের - অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন্ট -মধ্যে অ্যান্টিজেন্টের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বিএসএমএমইউকে চিঠি দেয় তারা।

তবে লালা সংগ্রহের জন্য নতুন একটি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। দুই-একদিনের মধ্যে তা বিএসএমএমইউর কাছে জমা দেয়ার কথা রয়েছে গণস্বাস্থ্যের।

কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরুর প্রায় দেড় মাস পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এন্টিবডি কিটের ফল প্রকাশ করল বিএসএমএমইউ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। এ সময় অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান (উপ-উপাচার্য, শিক্ষা), অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম (উপ-উপাচার্য, প্রশাসন), অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন (উপ-উপাচার্য, গবেষণা ও উন্নয়ন), কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. শাহিনা তাবাসসুম (ভাইরোলজি বিভাগ), অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ (চেয়ারম্যান, মাইক্রোবায়োজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগ, অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী (চেয়ারম্যান, ভাইরোলজি বিভাগ) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমইউ/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।