করোনায় ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যু

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ১৬ জুন ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ছোবলে দেশে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে আরও ৫৩ জনের প্রাণ। এটি এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ২৬২ জনে। একই সময়ে নতুন করে আরও তিন হাজার ৮৬২ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪ হাজার ৪৮১ জনে।

মঙ্গলবার (১৬ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন পড়েন।

তিনি মোট ৬১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৪০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ২১৪টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার ৭১৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৮৬২ জনের দেহে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪ হাজার ৪৮১ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৫৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ২৬২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ২৩৭ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৩৬ হাজার ২৬৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৭ জন এবং নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুইজন, চল্লিশোর্ধ্ব নয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব আটজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা গেছেন। ৩০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন খুলনা বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভা‌গের এবং একজন করে বরিশাল ও ময়মন‌সিংহ বিভা‌গের। ৩৪ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১৮ জন বাসায় এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

গত সোমবারের (১৫ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ হাজার ৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৯৯ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এবং রোগী শনাক্ত- উভয়ই বেড়ে হয়েছে নতুন রেকর্ড। এর আগে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল ৪৬ জনের এবং সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের রেকর্ড ছিল তিন হাজার ৪৭১ জনের। দুটি রেকর্ডের কথাই জানানো হয় গত ১২ জুনের বুলেটিনে।

মঙ্গলবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৩৫ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৫৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ছয় হাজার ১৭৭ জন। বর্তমানে আই‌সো‌লেশ‌নে আ‌ছেন ১০ হাজার ৩০২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৪২১ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৭৭৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৪৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৬৪ হাজার ২৩৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬২ হাজার ৫৪৬ জন।

দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা। তিনি বলেন, নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিজেদেরই হাতে।

গোটা বিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের ছোবলে বিপর্যস্ত। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া ৮১ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। তবে প্রায় সাড়ে ৪২ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।

এমইউ/এইচএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।