করোনায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের সাবেক পরিচালকের মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক মারা গেছেন। তাকে সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। তাকে দাফনের জন্য সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ করোনার সাথে যুদ্ধ করে মঙ্গলবার (১৬ জুন) ভোর সাড়ে ৫টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফাউন্ডেশন অব ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী।
ড. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ নিয়ে মুজিবুর রহমান সংকটাপন্ন অবস্থায় সিএমএইচে ভর্তি হন গত ২ জুন। অবস্থা খারাপ হলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। কিন্তু তাতেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা যান।’
অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হকের মৃত্যুতে চিকিৎসক সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার স্মৃতিচারণ করে অনেক চিকিৎসক শোক প্রকাশ করছেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. রুহুল হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের অত্যন্ত প্রিয় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের প্রাক্তন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. মুজিবুর রহমান আজ ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি বেশ কয়েকদিন যাবত করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাঝখানে অনেক সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। আমার সাথে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে তার অসুস্থতা বেড়ে গেলে আইসিইউতে ট্রান্সফার করতে হয়। দুঃখের বিষয় সেখান থেকে তাকে আর আমরা ফিরিয়ে আনতে পারলাম না।
তিনি লিখেছেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। মিডল-ইস্টে অনেকদিন কাজ করে দেশে ফিরে এসেছিলেন। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি তিনি এলাকার মানুষের জন্য একটি অত্যন্ত সুন্দর স্কুল তৈরি করেছেন সম্পূর্ণ নিজের খরচে। এছাড়াও সকল সময়ে এলাকায় যেতেন এবং মানুষদের চিকিৎসা করার করতেন। তিনি বহুদিন থেকে আমাদের ট্রমা সেন্টারে রোগী দেখে আসছেন। তার অগণিত রোগী সকলেই নিশ্চয়ই তার জন্য দোয়া করবেন।
অধ্যাপক ডা. রুহুল হক আরও লিখেছেন, রিটায়ার করার আগে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ডিরেক্টর হিসেবে অনেকদিন কাজ করেছেন এবং প্রফেসর অব মেডিসিনও ছিলেন। অসুস্থ হয়ে সিএমএইচে ভর্তি হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন আমার সাথে কথা হয়েছে এবং সুস্থতাবোধ করছিলেন। হঠাৎ করে রেসপিরেটরি প্রবলেম দেখা দেয়ায় আইসিইউতে নিতে হয়। সেখানে গত কয়েকদিন চিকিৎসা করেও তাকে আর আমাদের মাঝে ফিরে পেলাম না।
তিনি লিখেছন, তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আসুন সকলে মিলে আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। তিনি আমাদের নলতা হাইস্কুল থেকে পাস করেছিলেন। নলতা স্কুল প্রাক্তন ছাত্র সংসদের সকল সদস্য তার জন্য দোয়া করবেন এবং তার পরিবার-পরিজনের জন্য যেকোনো কাজে হাত বাড়িয়ে দেবেন আশা করি।
এমইউ/পিডি/বিএ/পিআর