হায়‌রে জীবন : ঘু‌মে সাদৃশ্য!

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:২৭ পিএম, ১৫ জুন ২০২০

রাত খুব একটা বেশি হয়নি। বড় জোর সাড়ে ৮টা কিংবা ৯টা। করোনা পরিস্থিতির কারণে চারদিক সুনসান। ফলে সন্ধ্যা পরবর্তী এ সময়টাতেই গভীর রাতের মতো পরিবেশ বিরাজ করছে। রাস্তায় মানুষের চলাচল একেবারেই হাতেগোনা। হঠাৎ করে নীলক্ষেতের অদূরে মিরপুর রোডে ওভার ব্রিজের সামনের ফুটপাতে চোখ পড়তে দেখা যায়, ফুটপাতেই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে একটি কুকুর। কয়েক ফুট দূরে একটি প্লাস্টিকের উপর ঠিক একই কায়দায় জবুথবু হয়ে ঘুমাচ্ছিলেন এক ভাসমান হতদরিদ্র যুবক।

খুব ভালো করে লক্ষ্য না করলে বোঝাই দায় ওই যুবক যে মানুষ। একেবারেই নড়াচড়া নেই যুবকের। করোনা পরিস্থিতির কারণে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও স্বল্পসংখ্যক বাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল সশব্দে দ্রুতগতিতে ছুটে যাচ্ছে মিরপুর রোড থেকে সোজা সায়েন্স ল্যাবরেটরির দিকে। কিন্তু যানবাহনের হর্ন কিংবা উচ্চ শব্দে ছুটে যাওয়া কিছুই স্পর্শ করছে না ভাসমান ওই যুবককে। মানুষ এবং কুকুর শুয়ে আছে একই ফুটপাতের বিছানায়। এ যেন সুখের নিদ্রায় বিভোর দুটি প্রাণী। বেশ কিছুক্ষণ পর একজন মহিলাকে পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ভয়ার্ত দৃষ্টিতে ঘুমন্ত ওই যুবক এবং কুকুরের দিকে তাকাতে দেখা যায়। বেঘোরে ঘুমানো ওই যুবক এতটুকু নড়াচড়া না করায় বেঁচে আছে কি না তাও বোঝা দায়।

photo-1

একই সময় সেখানে এসে দাঁড়ায় দুই মোটরসাইকেল চালক। এভাবে ওই যুবক ও কুকুরটিকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে তারা বলাবলি করছিলেন, কত মানুষ একটু ঘুমের জন্য পাগলপ্রায় হয়ে যায়। অনেকে ঘুমের ওষুধ খায়, কেউ ভিজিট দিয়ে ডাক্তার দেখায়, কত কিছুই না করে। ভাসমান এই যুবকের থাকার জায়গা ও খাবার নিশ্চয়তা না থাকলেও কী সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে। আসল সুখী তো এই ভাসমান যুবকই, এ কথা বলাবলি করতে করতে তারা সামনে এগিয়ে যান।

এমইউ/এফআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।