প্রতিমা বিসর্জন আজ
ভক্তি আর শ্রদ্ধায় আরতি, অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল পূজা। শারদীয় দুর্গোৎসবের নবমী এবং দশমী ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এ বছর নবমী ও দশমী তিথি একই দিনে থাকায় শাস্ত্রীয় বিধান মেনে পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা গতকালই শেষ হয়ে যায়।
পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য জয়ন্তী দত্ত জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার আমাদের পূজা শেষ হয়েছে। তবে মায়ের বিসর্জন হবে আজ (শুক্রবার)। এ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে।
বৃহস্পতিবার মহানবমী ও বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়েই শেষ হয় শারদীয় দুর্গাৎসোব। সকাল ৭টা ৩৩ মিনিটে মহানবমী কল্পারম্ভ ও মহানবমীর বিহিত পূজা, সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে দশমীর বিহিত পূজা ও দর্পণ নিরঞ্জন। সকাল থেকেই ছিল প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় ভোগ আরতি।
আজ প্রতিমা বিসর্জনের আগে সকালে নারীদের আকর্ষণীয় সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হবে, বিসর্জনের আগে দুপুরের দিকে শোভাযাত্রা। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে বিজয়ার শোভাযাত্রা বের করা হবে। এই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু ধর্মের পরম কাঙ্ক্ষিত শারোদোৎসব।
বুধবার অষ্টমীর বিশেষ আকর্ষণ ছিল কুমারী পূজা। দেবী দুর্গার প্রতীক হিসেবে কুমারী কন্যাকে মাতৃরূপে অঞ্জলি দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা, যার নাম কুমারী পূজা। সাধারণত ১৬ বছরের কম বয়সী কন্যা শিশুদের মধ্য থেকে ‘দেবীত্বের লণ বিচার করে’ কুমারী নির্বাচন করেন পুরোহিতরা।
গুলশান বনানীর পূজা উৎসবে এ ক’দিন দেখা যায়- ‘দুর্গা মা-ই কি, জয়’ধ্বনিতে পূজা শুরু করে ঢোলের শব্দের সঙ্গে থেমে থেমে কাসর ঘণ্টা, শঙ্খনাদ আর নানা বয়সের নারীদের ঊলুধ্বনির মধ্যদিয়ে মুখর হয়ে ওঠে প্রাঙ্গন।
ভক্তরা ‘দেবীর’চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রাণিকুলের কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করেন। দেবীকে এক নজর দেখার জন্য ভক্তদের মণ্ডপে ভিড় করতে দেখা যায়। হাজারো ভক্ত জয়ধ্বনি দিয়ে বরণ করে নেন মাকে। ভক্ত আর দর্শনার্থীদের ভিড়ের মধ্যে দেবীর সঙ্গে সেলফি আর ছবি তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে আগত সকলকে।
পূজা উদযাপন কমিটির অন্যতম সন্তোষ সরমা জাগো নিউজকে বলেন, গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ দীর্ঘ আট বছর ধরে পূজার আয়োজন করে যাচ্ছে। এবারো সকলের সহযোগিতায় আমাদের সার্বজনীন পূজা উৎসব নবমী ও বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। শুক্রবার পার্বন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আশীর্বাদে আমাদের সনাতন ধর্মে শান্তি ফিরে আসবে।
সনাতন হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাস অনুসারে, দেবী দুর্গা তার সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসার জন্য মহালয়ার দিন যাত্রা শুরু করেন। আর বিজয়া দশমীতে সন্তানদের নিয়ে স্বর্গে ফিরে যান দেবী। এ বছর দেবী দুর্গা ঘোড়ায় মর্ত্যে এসেছিলেন, আর দোলায় করে ফিরে যাবেন।
এফএইচ/বিএ