এএসআই ইব্রাহিমের খুনিরা শনাক্ত
রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন গাবতলী এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইব্রাহিম মোল্লা খুনিরা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে মাসুদ রানা নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। তার মাধ্যমে অপর খুনির নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাবতলীর পর্বত সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় দুই দুর্বৃত্তের ব্যাগ তল্লাশি করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহন হন এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।
ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড প্রসিকিউশন) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান, যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) কৃষ্ণপদ রায়, মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) কাইয়ুমুজ্জামান, দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান।
রাতেই আটককৃত মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দারুস সালাম থানায় যান তারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড প্রসিকিউশন) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ৮টার দিকে একটি বাসে গাবতলীতে অবতরণ করে দু’জন।
তখন গাবতলী পর্বত সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্ট চলছিল। সেখানে আসা মাত্র পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়ে আগন্তুক ওই দু`জন। তল্লাশিকালে ছুরিকাঘাতের শিকার হন ইব্রাহিম মোল্লা। মাসুদ রানা নামে একজনকে আটক করতে পারলেও মূলহোতা পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘এটা একটি আকস্মিক ঘটনা। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছি। খুব দ্রুত মূলহোতা ধরা পড়বে।’ মূলহোতা শনাক্ত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ মূলহোতা শনাক্ত হয়েছে। আমরা আটক মাসুদ রানার মাধ্যমে তার নাম-পরিচয় পেয়েছি। তিনি কী করেন, কোথায় থাকেন সব তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য এখন দেয়া যাচ্ছে না।
আটককৃতের কাছ থেকে কোনো আলামত জব্দ করা গেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আটক মাসুদের কাছ থেকে একটি ক্যামেরা জব্দ করা হয়েছে। ক্যামেরাটি কী কাজে কেন আনা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশ কনস্টেবল নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, ইব্রাহিম মোল্লা নিচু হয়ে হেলে ওই দুই দুর্বৃত্তের কাছে থাকা ব্যাগের চেইন খোলার চেষ্টা করছিলেন। এসময় একজনকে দৌড় দিতে দেখা যায়। অপরজন ইব্রাহিম মোল্লার পেটে ও বুকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমা আকতার জানান, হত্যার উদ্দেশেই ইব্রাহিম মোল্লাকে তিনটি ছুরিকাঘাত করা হয়। এর একটি বুকের ডান দিকের উপরের আঘাত করা হয়। যা খুবই গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে। পেটের উপরের দিকে ও পেটের নিচের দিকে আরো দুটি ছুরিকাঘাত করা হয়। এসব ‘সিম্প্টম’ দেখে মনে হচ্ছে খুনিরা প্রফেশনাল কিলার।
উল্লেখ্য, নিহত এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার সোনারকোলা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামে। বউ ও এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন ৪৮/৩ বর্ধবাড়ি এলাকার একটি বাসার পাঁচতলায় থাকতেন তিনি। গত দেড় বছর যাবত তিনি দারুসসালাম থানায় কর্মরত।
জেইউ/বিএ