নবমী-দশমীর মধ্য দিয়ে পূজা শেষ, শুক্রবার বিসর্জন
ভক্তি আর শ্রদ্ধায় আরতি, অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে শুরু পূজা। শারদীয় দুর্গোৎসবের চতুর্থ দিনে আজ নবমী এবং দশমী। এ বছর নবমী ও দশমী তিথি একই দিনে থাকায় শাস্ত্রীয় বিধান মেনে পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা আজ শেষ হয়ে যাবে। দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসব।
পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য জয়ন্তী দত্ত জাগো নিউজকে বলেন, আজ আমাদের পূজা শেষ হয়েছে। তবে মায়ের বিসর্জন হবে শুক্রবার।
বৃহস্পতিবার মহা নবমী ও বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়েই শেষ হবে শারদীয় দুর্গাৎসোব। সকাল ৭টা ৩৩ মিনিটে মহানবমী কল্পারম্ভ ও মহানবমীর বিহিত পূজা, সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে দশমীর বিহিত পূজা ও দর্পণ নিরঞ্জন। সকাল থেকেই চলছে প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় ভোগ আরতি।
২৩ অক্টোবর শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জন। তবে তার আগে শুক্রবার সকালে নারীদের আকর্ষণীয় সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হবে, বিসর্জনের আগে দুপুরের দিকে শোভাযাত্রা। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে বিজয়ার শোভাযাত্রা বের করা হবে। এই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু ধর্মের পরম কাঙিক্ষত শারোদোৎসব।
তার আগে বুধবার অষ্টমীর বিশেষ আকর্ষণ ছিল কুমারী পূজা। দেবী দুর্গার প্রতীক হিসেবে কুমারী কন্যাকে মাতৃরূপে অঞ্জলি দেয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা, যার নাম কুমারী পূজা। সাধারণত ১৬ বছরের কম বয়সী কন্যা শিশুদের মধ্য থেকে ‘দেবীত্বের লণ বিচার করে’। কুমারী নির্বাচন করেন
পুরোহিতরা।
গুলশান বনানীর পূজা উৎসবে এ ক’দিন দেখা যায়- ‘দুর্গা মা-ই কি, জয়’ধ্বনিতে পূজা শুরু করে ঢোলের শব্দের সাথে থেমে থেমে কাসর ঘণ্টা, শঙ্খনাদ আর নানা বয়সের নারীদের উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে মুখর হয়ে ওঠে প্রাঙ্গন।
ভক্তরা ‘দেবীর’চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রাণিকুলের কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করেন। দেবীকে এক নজর দেখার জন্য ভক্তদের মণ্ডপে ভিড় করতে দেখা যায়। হাজারো ভক্ত জয়ধ্বনি দিয়ে বরণ করে নেন মাকে। ভক্ত আর দর্শনার্থীদের ভিড়ের মধ্যে দেবীর সঙ্গে সেলফি আর ছবি তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে আগত সকলকে। দর্শনার্থী ও ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে চলছে বৃহস্পতিবার পূজার শেষ দিন।
পূজা উদযাপন কমিটির অন্যতম সন্তোষ সরমা জাগো নিউজকে বলেন, গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ দীর্ঘ আট বছর ধরে পূজার আয়োজন করে যাচ্ছে। এবারও সকলের সহযোগিতায় আমাদের সার্বজনীন পূজা উৎসব নবমী ও বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। শুক্রবার পার্বন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আশীর্বাদে আমাদের সনাতন ধর্মে শান্তি ফিরে আসবে।
বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিনে সকালে পূজা মণ্ডপে তেমন ভিড় দেখা না গেলেও আইন-শৃংখলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চলছে পূজা উৎযাপন। সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল মণ্ডব পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান সন্তোষ সরমা।
সনাতন হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাস অনুসারে, দেবী দুর্গা তাঁর সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসার জন্য মহালয়ার দিন যাত্রা শুরু করেন। আর বিজয়া দশমীতে সন্তানদের নিয়ে স্বর্গে ফিরে যান দেবী। এ বছর দেবী দুর্গা ঘোড়ায় মর্ত্যে এসেছিলেন, আর দোলায় করে ফিরে যাবেন।
এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি