লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যা : ২২ মামলায় গ্রেফতার ১৩
মানবপাচারের শিকার ২৬ বাংলাদেশিকে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে হত্যার ঘটনায় ২২টি মামলা করা হয়েছে। রোববার (৭ জুন) পর্যন্ত এসব মামলা করা হয়।
আইজিপির কঠোর নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব, ডিএমপি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
রোববার (৭ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা এসব তথ্য জানান।
লিবিয়ায় গত ২৮ মে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনার পর সম্প্রতি এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, যেভাবে আমাদের দেশের মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এই ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ পুলিশের সব ইউনিট প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
পুলিশের মাঠপর্যায়ের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে এভাবে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেই অবস্থানে এখন বাংলাদেশ নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদায় বলীয়ান এক অন্য বাংলাদেশ। অর্থ উপার্জন ও জীবিকার জন্য দুর্গম ও অবৈধ পথে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমানোর কোনো কারণই নেই। যারা আমাদের দেশের নাগরিকদের প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে নিয়েছে, যাদের কারণে এই নির্মম মৃত্যু ঘটেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেয়া হবে না। তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনি প্রক্রিয়ায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যেন ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশিকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, তার জীবন নিয়ে খেলার দুঃসাহস কোনো মানুষ দেখাতে না পারে। দেশে ও বিদেশে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে।
স্বজনদের কান্নার দাগ শুকানোর আগেই, এই অপরাধী চক্রকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কঠোর নির্দেশ দেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, “এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পর আমি দ্বিতীয়বার তোমাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো, এর আগে নয়।”
এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, আইজিপির কঠোর নির্দেশে, তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব, ডিএমপি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এরই মধ্যে ৭ জুন পর্যন্ত মোট ২২টি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের চিহ্নিত করে আইজিপির নির্দেশে গ্রেফতারে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ইতোমধ্যেই ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। সংশ্লিষ্ট অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ প্রত্যেক মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের এই অভিযান চলমান থাকবে।
জেইউ/জেডএ/এমএস