অর্ডিন্যান্সের অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন


প্রকাশিত: ০১:৩২ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৫

দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর এখন এ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সের অপেক্ষায় রয়েছে সরকার। বর্তমানে সংসদ অধিবেশন না চলায় অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত আইনগুলো কার্যকর করা হবে। সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন অভিন্ন নীতিমালার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত একাধিক খসড়া আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। এজন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিধিমালার সঙ্গে সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কোথায়-কী ধরনের সাদৃশ্য আর পার্থক্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে ইসি।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত সব আইন খতিয়ে দেখছি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী ধরনের সংশোধনী আনা দরকার তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। এখন এ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স হলেও কাজ শুরু হবে।

ইসি সূত্র জানায়, স্থানীয় পর্যায়ের সব নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে তার কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় চার নির্বাচন কমিশনার, কমিশন সচিব, যুগ্ম-সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বৈঠকে অভিন্ন আচরণবিধি ও বিধিমালা তৈরির বিষযে আলোচনা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিধান রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান আছে।

সিইসিসহ অন্য কমিশনার এ বিষয়ে একমত হন যে, স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে, জাতীয় সংসদের ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

একইভাবে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট আসন বা এলাকার মোট ভোটারের এক শতাংশ ভোটার সমর্থকের স্বাক্ষরসহ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়। স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়র, পৌর মেয়র কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন এবং মেম্বার, সংরক্ষিত মেম্বার ও সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্যদের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হলে ১০ জন ভোটার না-কি ৫০ জন ভোটারের সমর্থকের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে সে বিষয়ে কোনো ঐক্যমত পৌঁছাতে পারেনি কমিশন।

জানা গেছে, স্থানীয় স্তরের নির্বাচনগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্র বিস্তৃত। এ পদে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ৬০ হাজার ধরনের ব্যালট মুদ্রণ করতে হবে ইসিকে। এতো বিপুল পরিমাণ ব্যালট মুদ্রণের জন্য সরকারি বিজি প্রেসের পাশাপাশি অন্যান্য প্রেসেও ছাপানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে কমিশন। বিদ্যমান সময়ের মধ্যে বিপুল ব্যালট মুদ্রণ রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। এছাড়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর ভোটগ্রহণ পর্যন্ত প্রায় ১৭-১৮ দিন সময় থাকে।

স্থানীয় নির্বাচনে এ সময় বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের সময় ১৫ দিন রয়েছে। কমিশনের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে তা দ্বিগুণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। পৌর বিধিমালায় উল্লেখ্যযোগ্য সংশোধনী এনে প্রার্থীকে তার নিজ রাজনৈতিক দলের পক্ষে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা সমপদধারী ব্যক্তির দলীয় মনোনয়নের প্রত্যায়নপত্র দিতে হবে জমা দিতে হবে।

রাজনৈতিকগুলো তাদের নিজস্ব দলের পক্ষে মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রাথমিকভাবে একাধিক মনোনয়ন দিতে পারবেন। তবে এ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ক্ষমতা থাকবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের।

রাজনৈতিক দল কোনো পদে প্রাথমিকভাবে একাধিক মনোনয়ন প্রদান করলে প্রত্যাহারের তারিখ ও সময়ের পূর্বে ওই দলের চেয়ারম্যান অথবা সাধারণ সম্পাদক অথবা সমপদাধিকারী নিজে অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে চূড়ান্তপ্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করবেন। এরপর অবশিষ্ট প্রার্থী বা প্রার্থীগণ অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।