তথ্য-প্রমাণ জমা দেয়নি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা


প্রকাশিত: ০৪:৩২ এএম, ২১ অক্টোবর ২০১৫

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর তদন্ত কমিটির কাছে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য-প্রমাণ জমা দেয়নি মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বিএমএ’র ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ সর্দারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রমাণাদি সংগ্রহের জন্য বিএমএ ভবনে অপেক্ষা করলেও কেউ তা নিয়ে আসেনি।

সোমবার রাতে বিএমএ’র মধ্যস্থতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এক বৈঠকে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়ে পরদিনই বিএমএ’র তদন্ত কমিটির কাছে তা জমা দিতে চেয়েছিল।

ওই বৈঠকে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে লেখক, কলামিষ্ট ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংবাদিক আবু সাইদ খান এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে ৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে বিএমএ ভবনে আলোচনায় অংশ নেয়া পাঁচ শিক্ষার্থীর কেউ না আসলেও অন্য বেশ কিছু শিক্ষার্থী মঙ্গলবার বিএমএ নেতাদের সঙ্গে দেখা করে তথ্যপ্রমাণ দিতে হলে তাদেরকে সময় দিতে হবে বলে জানায়। বিএমএ নেতারা কতদিন লাগবে জানতে চাইলে তারা কেউ নির্দিষ্ট দিনক্ষণের কথা জানাতে পারেনি।

বিএমএ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান জাগো নিউজকে জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এমন দাবিতে গত এক মাসেরও বেশী সময় ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসলেও মঙ্গলবার তথ্যপ্রমাণ নিয়ে হাজির না হওয়ায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন। তাদের কাছে আদৌ অকাট্য কোন প্রমান রয়েছে কি না এ ব্যাপারে আমি সন্দিহান। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্দোলনের বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়া নেয়া নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য-প্রমাণ পেলে আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনার কথা ছিল। শিক্ষার্থীরা না আসায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

এ অবস্থায় বিএমএ কি করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের যে দু’জন প্রতিনিধি সেদিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসেছিলেন তাদের চায়ের দাওয়াত করে বিএমএ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনদিনের মধ্যে তারা যতটুকু পেয়েছেন ততটুকুই মিডিয়ার কাছে তুলে ধরবেন।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতিবাদে চলা আন্দোলন থামিয়ে দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় আন্দোলনকারীরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলে জানায়।

প্রতিনিধি দলের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা বলেছি আমাদের কোনো প্রতিনিধি না থাকলে আমরা সেই তদন্ত মেনে নেবো না। তাছাড়া আমাদের আন্দোলনও চলবে। আজ (বুধবার) সকালে তারা আন্দোলনের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে । তাছাড়া শহীদ মিনারে আমাদের অবস্থান কর্মসূচিও চলবে।

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে ও পুনঃপরীক্ষার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহম্মদকে আহ্বায়ক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও যাচাই বাছাই করে প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি প্রমাণাকারে তুলে ধরবে।

জানা গেছে তদন্ত শেষে সবকিছু জেনে আগামী ৩০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৪টায় টিএসসিতে গণশুনানি হবে। এরপর সব প্রমাণাদিসহ ২০ নভেম্বর পুরো রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

এমইউ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।