বাদামতলী ফলের আড়তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই নেই

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:১৬ পিএম, ৩০ মে ২০২০

একসঙ্গে বৃত্তাকার স্থানে দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি মারছেন জনাবিশেক মানুষ। ভেতর থেকে উচ্চস্বরে এক ব্যক্তির চিৎকার ভেসে আসছে ‘এই বার, তের, চৌদ্দ, পনের ও ষোলোশ’। কৌতুহলবশত সামনে এগিয়ে উঁকি দিতে দেখা যায়, ভেতরে অল্প বয়সী এক তরুণ একটি টুলে বসে আছেন, তার সামনে একে একে ভারি বস্তা এনে রাখছেন শ্রমিকরা।

বস্তার মুখ খুলে সবুজ পাতা সরিয়ে বের করা হচ্ছে লিচুর গুচ্ছ এবং টুল পেতে বসা তরুণ ডাক (নিলাম) শুরু করছেন। কয়েকবার ডাকার (নিলাম) পরে বস্তা সরিয়ে লেনদেন হচ্ছে টাকা-পয়সার। লিচু কেনার পর বস্তাগুলো ভ্যানের ওপর তুলে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এ দৃশ্যপট রাজধানীর অন্যতম পাইকারি ফলের বাজার বাদামতলীর। গতকাল শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে পাইকারি বাজারে মৌসুমী ফল লিচু, আম, কাঁঠাল ও তালের শাঁসসহ অন্যান্য বিভিন্ন ফল (আঙুর, আপেল, কমলা, নাশপাতি) বেচাকেনা চলছে।

jagonews24

লক্ষণীয় বিষয় হলো, বাদামতলী ফলের আড়তে এলে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই রাজধানী ঢাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। পাইকারি বাজারে কেনাবেচার নিয়ম অনুসারে নিলামে ডাক তুলে ফলমূল বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মুখে মাস্ক ও হাতে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহারসহ নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিলেও এই ফলের আড়তে এসবের বালাই নেই।

jagonews24

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বড় বড় আড়তের বাইরে রাস্তায় ট্রাক থেকে লিচু, আমসহ বিভিন্ন ফল নামিয়ে নিলামে বিক্রি হচ্ছে। এ সময় সিংহভাগ উপস্থিত মানুষের মুখে মাস্ক কিংবা হাতে গ্লাভস পরেনি। তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব তো দূরের কথা একেবারে গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন ও শ্বাস-প্রশ্বাস ফেলছেন। কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও কাজ করার সময় তা মুখের নিচে নামিয়ে রেখেছেন অনেকে।

ফলের আরতদার-মালিকরা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে এবার ব্যবসা খুবই খারাপ। অন্যান্য সময় এখানে পা ফেলার জায়গা না থাকলেও এখন ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। তবে আগামী ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু হলে বেচাকেনা বাড়বে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এমইউ/এমএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।