বাগেরহাটে আ. লীগ নেতাকে খুনের ঘটনায় আটক ৩
বাগেরহাটের রামপালে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মাজেদ সরদারকে (৬৩) জবাই করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে রামপাল উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকার চিংড়ি খামার থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন, কালিকাপ্রসাদ গ্রামের ওয়াদুদ ইজারাদারের ছেলে রবি ইজারাদার (২৮), একই গ্রামের আফতাপ শেখের ছেলে ইলিয়াস শেখ (৩০) ও বুলবুনিয়া গ্রামের জলিল লসকারের ছেলে আলম লসকার (২৮)।
নিহত মাজেদ সরদার রামপাল উপজেলার রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলার রাজনগর গ্রামের মৃত আক্কাস সরদারের ছেলে। ঘাতকদের পরিচয় জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থলের আশপাশের চিংড়ি খামার থেকে তিন পাহারাদারকে আটক করেছে পুলিশ। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা রেকর্ড করা হয়নি।
এলাকাবাসী ও নিহত আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা আবুল কালাম জানান, স্থানীয় শাসক দলের প্রভাবশালী নেতাদের দখলে থাকা সরকারি খালে অবৈধ বাধ দিয়ে চিংড়ি চাষের বিরোধীতা করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা এই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাফর ইকবাল বলেন, মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যালেন খননের পর প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে আটকে রাখা সরকারি খালের অবৈধ বাধ অপসারণে প্রশাসনকে সহযোগিতা করায় আব্দুল মাজেদ সরদারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
রামপাল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আব্দুল মাজেদ উপজেলার রাজনগর গ্রামের বাড়ি থেকে রাত ৯টার দিকে একা বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী কালিকাপ্রসাদ গ্রামে তার চিংড়ি খামারে যাচ্ছিলেন। পথে নির্জন এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। পরে এলাকাবাসী চিংড়ি খামারের কাছে আওয়ামী লীগ নেতার জবাই করা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। রাতে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের গলা জবাই করাসহ শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে লাশের ময়নাতদন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। বিকালে জানাজা শেষে রাজনগর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মাজেদ সরদারকে দাফন করা হয়েছে। পুলিশ ঘাতকদের পরিচয় জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থলের আশপাশের চিংড়ি খামার থেকে তিন পাহারাদারকে আটক করেছে।
তবে এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ ও ঘাতকদের সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ঘাতকদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি করেন ওসি। তিনি আরও বলেন নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী মামলা দায়ের করবেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা রের্কড করা হয়নি।
শওকত আলী বাবু/এআরএ/আরআইপি