ভাড়া বেশি নিলেই ব্যবস্থা : সেতুমন্ত্রী
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই সরকার ভাড়া বাড়িযেছে। কিন্তু এখন তারা নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করছেন। আমরা প্রমাণও পেয়েছি। কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকার জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আমি মন্ত্রী স্বয়ং রাস্তায় থাকবো। তবুও ভাড়া বাড়তে দিবো না। বিআরটিসিকে ঠিক করেছি, চেয়ারম্যানকে শোকজ করেছি, সেখানে বেসরকারি পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা কি আইনের ঊর্ধ্বে? কখনোই না। যারাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করবেন তাদেরকেই আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চালকরা সব সময় দোষী না। তবে তাদেরকে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়টা বুঝতে হবে। বাসের ভেতরে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হলে চালক দায়ী থাকবে। কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে মালিক পক্ষকে দায় নিতে হবে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে মোবাইলকোর্ট অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিআরটিএ-এর চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আরো দুইজন নতুন যোগদান করেছেন। এখন থেকে ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট একযোগে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করবেন। যেখানেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হবে সেখানেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন তারা।
ফিটনেসবিহীন, রুট পারমিটবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ধরতে হবে। এজন্য তিনি উপস্থিত বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যানকে শিগগিরিই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীতে যানজট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে এক পরিবারের দশ গাড়ি চলে। এটা কি করে সম্ভব? ছোট যানবাহনও বাড়ছে। এটা বন্ধে বিআরটিএ কার্যালয়ে ও মন্ত্রণালয়ে পৃথক আলোচনা হবে। এর একটা বিহিত করতেই হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের একটি সংস্থা কি করে দাবি করে বাংলাদেশে বছরে ২১ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, দিনে মারা যায় ৭ জন। আমরা যদি ১০ জনও ধরি তাহলে বছরে তিন হাজার ছয়শ’ এর বেশি হয় না। এমন রিপোর্ট কোনোভাবে মানা যায় না।
দুই কর্মকর্তাকে শাসালেন মন্ত্রী
বিআরটিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রসঙ্গক্রমে দুই কর্মকর্তাকে শাসিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
মাসুদ নামে এক কর্মকর্তার নাম ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘মাসুদ খাতির বন্ধ করো, আমি সব জানি, দালাল যেন না থাকে। আমি আর একদিন যদি ওখানে গিয়ে দালাল দেখতে পাই তাহলে কিন্তু….।’ পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাসুদ নামে ওই কর্মকর্তা ঢাকা ডিভিশনের ডেপুটি ডাইরেক্টর।
একই অনুষ্ঠানে প্রসঙ্গক্রমে সাভারের কর্মকর্তা মহসিন আলীকেও ব্যাপক শাসান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার ওখানে সবুজ কে? তিনিই নাকি ওই এলাকার বিআরটিএ চালান, সে আপনার কি লাগে? এসব বন্ধ করেন। নইলে কিন্তু…..।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক (অপারেশন) মো. শওকত আলী, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. ইউসুফ আলী মোল্লা, উপ-পরিচালক(এনফোর্সম্যান) শাহনেওয়াজ আলীসহ বিআরটিএ এর সকল জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেইউ/জেডএইচ/আরআইপি