কুপির আলোতে মেহেদির সাফল্য


প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ২০ অক্টোবর ২০১৫

প্রায় দিনই ওদের ঘরে কেরোসিন ফুরিয়ে যায়। ফলে ঠিকমতো কুপিও জ্বলে না। এরপরও কুপির আলোতে পড়ে সাফল্য পেয়েছে পিরোজপুর কাউখালী উপজেলা সদরের কেউন্দিয়া গ্রামের রিকশা চালকের ছেলে মেহেদী।

sussesজানা গেছে, রিকশা চালক বাবার পক্ষে অনেক সময় দু’বেলা দু’মুঠো খাবার ব্যবস্থা করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। এর মধ্যে দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগান দেয়া। তারপরও শত বাধা পেরিয়ে মেহেদি কেউন্দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৮৮ ও কাউখালী মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে। সব বাধা পেরিয়ে মেহেদি এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে `গ` ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

স্কুলের শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মেহেদি একদিনের জন্যও স্কুল ফাঁকি দেয়নি। পড়াশুনায় সে ছিল ভীষণ মনোযোগী। তারই ফল পেয়েছে সে।

মেহেদী বলেন, বাবা-মা ও স্কুলের সব শিক্ষক আমাকে সাহায্য করেছেন। অনেক কষ্ট করেই আমার শিক্ষা জীবন শুরু। আমার বাবা অনেক কষ্ট করে রিকশা চালিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের দুই ভাই বোনকে লেখাপড়া করিয়েছেন। আমার গ্রামে বিদ্যুৎ থাকলেও আমার বাড়িতে এখনও বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি। আমার স্কুল জীবনে কখনও কখনও জ্বালানি টুকুও ছিল না। অন্যের বাড়িতে গিয়ে, অন্যের বই দিয়ে পড়াশুনা করতে  হয়েছে।

success
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার খবর শুনে আমার খোঁজ খবর নিতে আমার বাড়িতে ছুটে আসেন উপজেলার বিশিষ্ট সমাজসেবক শিক্ষানুরাগী আ. লতিফ খসরু। তিনি আমাকে সাহস জোগালেন লেখা পড়া চালিয়ে যেতে। আমার খোঁজ খবন নিলেন। এটাই আমার বড় প্রাপ্তি।

susses মেহেদীর বড় বোন ফাতেমা নেছারাবাদ সরকারি কলেজে বিএসসির ছাত্রী। দুই সন্তানই পড়াশুনায় মনোযোগী হওয়ায় রিকশা চালক ইমাম হোসেন কঠোর পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনার চেষ্টা করেন। ছেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় বাবা ইমাম হোসেন খুশি। তবে একই সঙ্গে সন্তানের পড়াশুনা চালিয়ে নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত। তিনি বলেন, বড় কষ্ট করে ওদের এ পর্যন্ত লেখা পড়া করিয়েছি।

কাউখালী মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য শিক্ষা উদ্যোক্তা আ. লতিফ খসরু বলেন, চরম অভাবের মধ্যে ভাল ফলাফল করা যায় মেহেদী তার দৃষ্টান্ত। আমি ও এলাকাবাসী মেহেদীর এমন সাফল্যে খুশি।

এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।