চাঁদরাতেও জমেনি আতর-টুপি-তসবি বিক্রি
প্রতিবছর ঈদে নতুন জামা-জুতাসহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ করে একেবারে শেষ মুহূর্তে মানুষ ছুটে যেতেন আতর-টুপির দোকানে। দেশি-বিদেশি বাহারি সব আতর-টুপির পাশাপাশি কিনে নিতেন তসবি আর জায়নামাজ। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সব হিসেব এলোমেলো করে দিয়েছে। তাইতো এবার জমেনি আতর, টুপি, তসবি আর জায়নামাজ বিক্রিও।
রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মার্কেট বন্ধ থাকলেও ফুটপাতের দোকানগুলো খোলা রয়েছে।
পুরানা পল্টন ও গুলিস্তান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের মাঝের রাস্তায় বসেছে টুপি ও জায়নামাজের দোকান। তবে বিক্রেতারা ডাকাডাকি করলেও ক্রেতাশূন্য অবস্থাতেই কাটছে সময়।
বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে টুপি বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সংসার চালাতে কষ্ট হয়, তাই দোকানটা খুলেছি। কিন্তু বিক্রি নেই। আমাদের সারা বছর যা বিক্রি হয় তার অর্ধেকের বেশি হয় এই ঈদে। কিন্তু এবার মার্কেট বন্ধ, তার ওপর মসজিদেও তেমন লোক আসে না। এমন টুকটাক বিক্রি দিয়ে তো চলে না।’
একই অবস্থা রাজধানীর নিউ মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকা, মৌচাক মার্কেট, কাকরাইল মসজিদ, কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার দোকান ও ফুটপাতে।
এসব এলাকার একাধিক টুপি-জায়নামাজ বিক্রেতারা জানান, ঈদের আগে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করতেন তারা। আর স্থায়ী দোকানগুলোতে এর সাত-আট গুণ বেশি বিক্রি হতো। এবার করোনা পরিস্থিতির জন্য ১০ শতাংশও বিক্রি হয়নি।
কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খোলার অনুমতি দিলে একটা আশা দেখেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি। বিশেষ করে আতর ও টুপির বড় বাজার বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ব্যবসায়ীরা খুব হতাশ। এখানকার ফুটপাতের দোকানগুলো খুললেও বেচা-বিক্রি নেই। এদিকে কাওরান বাজার আম্বরশাহ শাহী মসজিদের আশপাশের দোকানগুলোতেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না।
বিক্রেতারা বলছেন, ‘জায়নামাজ, টুপি ও আতর এসব হলো শৌখিন পণ্য। মানুষের কাছে অতিরিক্ত টাকা থাকলে এসব পণ্য কিনতে আসেন। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবার কেউ এসব শৌখিন পণ্য কিনতে আসেননি। প্রয়োজনের তাগিদে যারা ঘর থেকে বের হয়, তাদের কেউ কেউ এসব দোকানে আসেন। তাতে সামান্য বেচা-বিক্রি হয়, তবে না হওয়ার পাল্লাটাই ভারী বেশি।’
এফএইচ/এফআর/এমকেএইচ