হত্যা মামলায় স্বামীর ফাঁসি : স্ত্রী সন্তানসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বগুড়ায় সাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীকে কৌশলে বাসায় ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসি এবং ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।
সোমবার বেলা ৩টায় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি সরকার পাড়ার গফুর আলীর ছেলে বেলাল হোসেন বিলু।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, বেলাল হোসেন বিলুর স্ত্রী নাসিমা বেগম, তার দুই ছেলে নাদিম এবং আজিম ও প্রতিবেশি নুর ইসলামের ছেলে রায়হান মিয়া।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে নাসিমা বেগম ও রায়হান মিয়া পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারের দিন থেকে তাদের সাজা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শহরের শিববাটি এলাকার মৃত বাহার আলীর ছেলে সাইদুল ইসলাম ২০০৬ সালের ২৭ জুলাই ব্যবসায়িক কাজে শহরের কালিতলা হাটে যাবার পর নিখোঁজ হন। দুদিন পর ২৯ জুলাই সাইদুলের ছোট ভাই শাহিনুর ইসলাম এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার সাধারণ ডায়েরি করেন। এ খবর জানতে পেরে দণ্ডপ্রাপ্ত বিলু তার বাড়িতে তালা লাগিয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে সাইদুলের পরিবারের সন্দেহ হওয়ায় ৩০ জুলাই থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পরে একই বছরের ১ আগস্ট সকালে বিলুর স্ত্রী নাসিমা বেগম তার বাড়ির পার্শ্বের একটি ডোবায় বস্তাবন্দি লাশ কচুরিপানা দিয়ে লুকানোর চেষ্টাকালে এলাকার জনগণ টের পেলে নাসিমা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করলে সাইদুলের পরিবার তার লাশ সানাক্ত করে। এ ঘটনায় পুলিশ বিলু ও তার দুই ছেলেকে গ্রেফতার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সাইদুলকে ২৭ জুলাই কৌশলে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রাতেই তাকে জবাই করে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে উঠানে গর্ত করে পুতে রাখা হয়। একমাস পর লাশ গর্ত থেকে উঠিয়ে ডোবায় লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে পুলিশ।
দীর্ঘদিন শুনানি শেষে স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সোমবার রায় ঘোষণা করেন।
বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি নাসিমুল করিম হলি ও আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন হাবিবুর রহমান।
লিমন বাসার/ এমএএস/পিআর