সমালোচনা নয় সবাই মিলে কাজ করলে মানুষ উপকৃত হবে
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের চেষ্টার কমতি নেই। করোনারোগী শনাক্তকরণে ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি ও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড, চিকিৎসক-নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা আরও জনবল বৃদ্ধি করা হবে। করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনতায় প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু সমালোচনা নয়, সকলে মিলে কাজ করলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে এবং করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সফল হবে।
রোববার (১৭ মে) রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে নবনির্মিত দুই হাজার ২০০ শয্যার হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সরকার কাজ শুরু করেছে। বিদেশ থেকে আগতদের কোয়ারেন্টাইনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বর্তমানে দেশের সাতটি বিভাগে মোট আক্রান্ত রোগীর ১৫ শতাংশ রোগী রয়েছে।
তিনি বলেন, শুরুর দিকে শুধু একটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা ও দৈনিক মাত্র ১৫০ নমুনা পরীক্ষা করা হলেও বর্তমানে ল্যাবের সংখ্যা ৪১টিতে বৃদ্ধি ও দৈনিক আট হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। নতুন করে ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এখনও রয়েছে। আমরা শঙ্কিত হই যখন দেখি রাস্তাঘাটে রিকশা ও সিএনজিতে মানুষ চলাচল করছে, হাটবাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ঘোরাঘুরি করছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠান দোকানপাট ফেরিঘাট ও কল-কারখানায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মানুষ বের হচ্ছে। এ কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে লকডাউন, যানবাহন চলাচল কিংবা রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে রোগীর সংখ্যা কমানো সম্ভব হবে না।
তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য গোপন না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তথ্য গোপন করার ফলে ডাক্তার ও নার্সরা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ডাক্তার-নার্সসহ সকলের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী প্রয়োজন মোতাবেক সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসাসেবার সাথে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আল্লাহ না করুক করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হলে তাদের হেলথ ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। যেকোনো বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে চলছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় যে ওষুধটি কার্যকর হয়েছে সেটি দেশেও উৎপাদন হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যে তা চলে আসবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরাও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা। তাদের জন্য হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া আরও যারা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে রয়েছেন পুলিশ সেনাবাহিনী তারাও অগ্রাধিকার পাবেন।
তিনি বসুন্ধরা গ্রুপকে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য দ্রুততম সময়ে এত বড় হাসপাতাল নির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।
এমইউ/বিএ/পিআর