ডেঙ্গু-চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসির অভিযান, জরিমানা
ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) আটটি অভিযান পরিচালনা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার চালানো এসব অভিযানে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ডিএনসিসি থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়নের নেতৃত্বে উত্তরায়; অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম শফিউল আজম মিরপুরে; অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ওয়ার্ড-২১ এর বাড্ডার “ক” ব্লক ও মধ্যবাড্ডা এলাকায়; অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হোসেন ডিএনসিসির ৩১ নং ওয়ার্ডের আসাদ এভিনিউ এলাকায়; অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরে; প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ মিয়া অঞ্চল-৯ এ এবং ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোসলিনা পারভীনের নেতৃত্বে গুলশান-১ ও গুলশান-২ এলাকায় ভ্রাম্যামাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন উত্তরা ১ নং ওয়ার্ডের সেক্টর-৭ ও সোনারগাঁ জনপথে এবং ওয়ার্ড-১৭ এর কুড়িল অম কুড়াতলীতে প্রায় ২০টি নির্মাণাধীন ভবন ও অফিস পরিদর্শন করেন। পরদর্শনকালে ৪টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে সেসব বাড়ির মালিকদের সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। একইসাথে ৩দিনের মধ্যে ওই স্থানের জমা পানি অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়।
অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম শফিউল আজম মিরপুরে অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি ১১ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ১ টিতে এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব খুঁজে পেলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ওয়ার্ড-২১ এর বাড্ডার “ক” ব্লক ও মধ্যবাড্ডা এলাকায় মোট ৮টি অভিযান পরিচালনা করেন। এতে এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়। এ ছাড়া ৭ টি প্রতিষ্ঠানকে এডিস মশার বংশবিস্তার সম্পর্কে সচেতন করা হয় এবং ১ টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হোসেন ডিএনসিসির ৩১ নং ওয়ার্ডের আসাদ এভিনিউ এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। সেখানে ৯টি নির্মাণাধীন আবাসিক ভবনের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ পরিদর্শন করা হলে সেখানে সন্তোষজনক পরিবেশ পাওয়া যায়। তবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১ টি পরিত্যক্ত ভবন সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় তালাবদ্ধ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে এটি পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন করার জন্য নোটিশ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন উত্তরা-১৪ নং সেক্টরে অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে প্রায় ৫০ টি বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা পরিদর্শন করে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের বিষয়ে জনগনকে সচেতন করা হয়। ২টি নির্মাণাধীন স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় কিন্তু ভবন মালিক বা সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের নোটিশ প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এডিস মশার প্রজনন স্থানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
অঞ্চল-৭ ও ৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবেদ আলী ৪৫ নং ওয়ার্ডের উত্তরখানের মাজার রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে প্রায় ১৮ টি স্থাপনা পরিদর্শন করে কোনো জরিমানা করা হয়নি। তবে এলাকাবাসীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও জমা পানি ফেলে দেয়ার বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে।
অঞ্চল-৯ এবং ১০ এর ৩৭ ও ৪৩ নং বেশকিছু বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন ডিএনসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হামিদ মিয়া। সেখানে জনসাধারণকে এডিস মশার প্রজননস্থল ধংসে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব ও জমা পানি ফেলে দেয়ার বিষয়ে সচেতন করা হয়, তবে কাউকে জরিমানা করা হয়নি।
এদিকে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোসলিনা পারভীন গুলশান-১ ও গুলশান-২ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এতে একাধিক নির্মাণাধীন ভবনে প্রচুর ময়লা আবর্জনা ও এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ থাকায় সেগুলো দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয় এবং ২টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় মালিকদের ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া অভিযান চলাকালে সব এলাকাতেই এলাকাবাসীকে এডিস মশার বিস্তাররোধে সচেতন করা হয়।
এএস/জেডএ/এমকেএইচ