রামপাল নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাখ্যা
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। রোববার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সংবাদ মাধ্যমে একটি ব্যাখ্যা পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার নিয়ে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মানুষের আয় বেড়েছে, জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশের উন্নয়নকে বেগবান করতে কৃষি, শিল্প, বানিজ্য এবং সামাজিক খাতের সম্প্রসারণ ও সমৃদ্ধি ঘটাতে হবে। এজন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ সীমিত, তাই সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে কয়লাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ৪০ শতাংশ, জার্মানী ৪১ শতাংশ, জাপান ২৭ শতাংশ, ভারত ৬৮ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৩ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়া ৭৮ শতাংশ , মালয়েশিয়া ৩৩ শতাংশ এবং চীন ৭৯ শতাংশ বিদ্যুৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন করে থাকে সেখানে বাংলাদেশ করে মাত্র ২.২৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে দেশের বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।
দেশের উন্নয়নের নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচনকারী এ প্রকল্প নিয়ে একটি মহল ও কতিপয় ব্যক্তি বা সংগঠন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার ও কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ করা হয়। যা ভিত্তিহীন, দেশের স্বার্থ বিরোধী ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে সুন্দরবন নিরাপদ দূরত্বে অবস্থিত। সুন্দরবনের ইউনেস্কো হেরিটেজ থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৬৯ কি.মি. দূরে এবং সুন্দরবনের প্রান্ত সীমা থেকে ১৪ কি.মি.দূরে অবস্থিত । এ ব্যাপারে কোনো প্রকার বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের উপর স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নির্ভরশীলতার কারণে নতুন নতুন বসতি স্থাপন, বন কেটে কৃষি জমির আবাদ, মৎস্য আহরণ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে শতাধিক বছর ধরেই সুন্দরবন সংকুচিত হয়ে আসছিল। বরং বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপিত হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের কারণে সুন্দরবনের উপর স্থানীয় অধিবাসীদের নির্ভরশীলতা কমবে, বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, ফলে সুন্দরবনর সংরক্ষণে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এসএ/এসকেডি/আরআইপি