আলু বোঝাই পিকআপের পাটাতনে ৫০০ বোতল ফেন্সিডিল
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল থেকে আলু বোঝাই পিকআপ ভ্যানের পাটাতনের বিশেষ চেম্বারে লুকিয়ে আনা ৫০০ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ করেছে র্যাব-২। এ সময় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (৯ মে) দুপুরে অভিযানটি চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি একদল মাদক ব্যবসায়ী সীমান্ত এলাকা জয়পুরহাট থেকে আলু বোঝাই পিকআপের পাটাতনে বিশেষ চেম্বারে লুকিয়ে বড় ধরনের মাদকের চালান নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর টাউন হলে আসবে। এমন সংবাদ পেয়ে চালানটি ধরার জন্য মোহাম্মদপুরের টাউন হলের আশপাশে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল অবস্থান নেয়। দুপুর সোয়া ২টায় মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের উত্তর পাশে আলু ভর্তি পিকআপটি থামলে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল তাতে থাকা আরোহীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে আনে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ড্রাইভার বাদে প্রত্যেকের কাঁধে ব্যাক প্যাক ব্যাগ দেখা যায়। ব্যাগগুলো তল্লাশি করে প্রত্যেকটি ব্যাগের কোনটিতে ৪০ বোতল কোনটিতে ৫০ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এগুলো পাওয়ার পর পিকআপটিতে ব্যাপক তল্লাশি করা হয়। এক পর্যায়ে গাড়ির হেল্পার জানান, গাড়ির একটি গোপন চেম্বার রয়েছে যা বাহিরে থেকে দেখা যায় না। স্বাভাবিক অবস্থায় কেউ এটি বের করতে পারবে না। স্থানীয় লোকজন, বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে গাড়ির হেল্পার ইঞ্জিন কাভার উঠিয়ে পাটাতনের ভেতরে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা চেম্বারের কাভার খুলে দিলে তাতে লুকিয়ে আনা ৫০০ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হচ্ছে রিদোয়ান (২৯), মো. আবুল কালাম আজাদ (৪৫), হেল্পার মো. বাব্চু মিয়া (৩৬), ড্রাইভার মো. আনিছুর মণ্ডল (৩২) ও আ. লতিফ (৫২)।
জিজ্ঞাসাবাদে ড্রাইভার আনিছুর ও হেল্পার বাচ্চু অপর তিন ব্যক্তিকে দেখিয়ে জানায়, তারা তিনজন ঢাকার ক্রেতা। জয়পুরহাট থেকে মাল এনে ঢাকার পার্টিকে দেয়া তাদের কাজ।
ঢাকার পার্টিকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, রিপন খালাসী নামের এক মাদক কারবারী ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। রিপনের হয়ে তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের চাহিদামত মাদক সরবরাহ করে থাকে। গাড়ির মালিকানা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে ড্রাইভার জানায়, রিপন নামের মাদক ব্যবসায়ী ঢাকা হতে পিকআপটিতে বিশেষভাবে পাটাতনে চেম্বার তৈরি করে তা জয়পুরহাট পাঠিয়েছে শুধুমাত্র মাদকের চালান আনা নেয়ার জন্য। গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নাম্বার খোঁজ করে দেখা যায় গাড়িটির ইঞ্জিন ও চেসিস নাম্বার ঘঁষামাজা করে উঠিয়ে ফেলা হয়েছে এবং গাড়িটিতে থাকা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ভূয়া। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে উক্ত ফেন্সিডিল সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট থেকে ঢাকায় এনে বিভিন্ন পাইকারদের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করে অবৈধভাবে লাভবান হয়ে থাকে।
আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ আইনে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হচ্ছে।
এআর/এএইচ/এমকেএইচ