২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে মৃতের সংখ্যা, কমেছে শনাক্ত রোগী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ০৯ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৪-এ। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৩৬ জন। ফলে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৭৭০।

শনিবার (৯ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি ৩৫টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ২৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় পাঁচ হাজার ৪৬৫টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ১৬ হাজার ৯১৯টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৭০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও আটজন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১৪-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৩১৩ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৪১৪ জন।

গত শুক্রবার (৮ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭০৯ জন। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বাড়লেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে।

শনিবারের বুলেটিনে ডা. নাসিমা বলেন, নতুন করে যারা মারা গেছেন, এদের সবাই পুরুষ; সত্তরোর্ধ্ব দুজন, ষাটোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুজন ও ত্রিশোর্ধ্ব একজন।

তিনি জানান, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সমাপ্ত ঘটনার বিবেচনায় এ পর্যন্ত সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ। মোট রোগী শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৯৬ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন দুই হাজার ১৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৩ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৪৩ জন।

করোনা চিকিৎসার জন্য সারাদেশে (ঢাকা শহরের বাইরে) আইসোলেশন শয্যা রয়েছে আট হাজার ৫৯৪টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে দুই হাজার ৯০০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঁচ হাজার ৬৯৪টি। এসব হাসপাতালে আইসিইউর সংখ্যা ৩২৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট ১০২টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৭৫৫ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ আট হাজার ৪০৫ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৭১৮ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজার ২২২ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৮ হাজার ১৮৩ জন।

দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে করোনা সেবা দেয়া যাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে।

বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন গোটা বিশ্বই করোনাভাইরাসের কবলে। মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া ৪০ লাখ। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পৌন তিন লাখ। তবে প্রায় ১৪ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে ছুটি। বন্ধ বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামীকাল রোববার (১০ মে) থেকে শর্তসাপেক্ষে শপিংমল খোলা রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৭ মে) থেকে শর্তসাপেক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায়ে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদও।

পিডি/এমইউ/এইচএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।