করোনা অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে কাঁদলেন ইমাম, কাঁদালেন মুসল্লিদের
গোটা মসজিদে জোরে কান্নার রোল। ইমাম ও মুসল্লিরা দুই হাত তুলে মোনাজাত করছেন আল্লাহ তায়ালার দরবারে। ইমাম সাহেব কান্নাজড়িত কণ্ঠে উচ্চস্বরে বলছেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি অসীম, তুমি মহান। আমরা তোমার গুনাহগার বান্দা, আমাদেরকে তুমি মাফ করে দাও। আমাদেরকে করোনাভাইরাসের অভিশাপ থেকে মুক্তি দাও, স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ করে দাও।’ এভাবে কেঁদে চলেছেন ইমাম। আর তার সঙ্গে কাঁদছেন মুসল্লিরা।
শুক্রবার (৮ মে) জুমার নামাজ শেষে মোনাজাতকালে রাজধানীর আজিমপুরের একটি মসজিদে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। তবে শুধু আজিমপুরের মসজিদে নয়, রাজধানীসহ সারাদেশের অসংখ্য মসজিদে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৬ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় জানায়, মসজিদে ওয়াক্ত নামাজে পাঁচজন ও জুমার নামাজে সর্বোচ্চ ১২ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ফলে ইচ্ছা থাকলেও মসজিদে এসে নামাজ পড়তে পারেননি মুসল্লিরা। গতকাল জোহর নামাজের সময় থেকে ওই নির্দেশনা তুলে নেয়া হয়েছে। এখন বেশকিছু শর্তাবলি মেনে নামাজ পড়তে পারছেন তারা।
মসজিদে নামাজের অনুমতি পাওয়ার পর আজ ছিল প্রথম জুমা। এক মাসেরও বেশি সময় পর জুমার নামাজ আদায় করতে মুসল্লিরা সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকেন। আজানের আগে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মসজিদ থেকে ঘোষণা আসে তারা যেন বাসা থেকে অজু করে আসেন। অপেক্ষাকৃত যারা বৃদ্ধ এবং হাঁচি-কাশিতে ভুগছেন তাদের মসজিদে না এসে ঘরেই নামাজ আদায়ের উপদেশ দেয়া হয়।
আজানের পরপরই বিভিন্ন বয়সের মুসল্লিরা মসজিদে আসতে থাকেন। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে সবার মুখেই মাস্ক থাকার কথা থাকলেও কিছু মুসল্লির মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। তবে মসজিদের সামনে অপেক্ষারত ভিক্ষুকদের মুখে ছিল মাস্ক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়। প্রবেশপথে জীবাণুনাশক স্যানিটাইজার নিয়ে মসজিদ কমিটির লোকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এক মাসেরও বেশি সময় পর জুমাপর নামাজ পড়তে পেরে অনেক খুশি বলে জানান মুসল্লিরা। ইকবাল হোসেন নামাজ পড়েছেন বায়তুল মোকাররম মসজিদে। তিনি বলেন, জুমার নামাজ আদায় করে মনটা খুশিতে ভরে গেছে। আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুহাত তুলে দোয়া করেছি, আল্লাহ আমাদের করোনাভাইরাসের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন।
এমইউ/এসআর/পিআর