সেবার মানসে পুলিশে আসা : ওসি জামাল উদ্দিন মীর


প্রকাশিত: ০৫:৪০ এএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৫

রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলো মধ্যে মোহাম্মদপুর অন্যতম। জনবসতিপূর্ণ এলাকাও বটে। প্রায় ৬ লাখ বাসিন্দার জন্য মাত্র ৯০ জন পুলিশ সদস্য এই থানায়। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে এসেছেন মো. জামাল উদ্দিন মীর। এর আগে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

এ থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ওসি হিসেবে কাজের চ্যালেঞ্জ কী এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন অনেক কিছু। জাগো নিউজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো :

জাগো নিউজ : রাজনৈতিক কারণে বছরের শুরুতে রাজধানীর অন্যান্য স্থানের মতো মোহাম্মদপুরেরও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। এখন কী অবস্থা?
 
জামাল উদ্দিন মীর : আড়াই মাস হলো এই থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বে এসেছি। এখন মোহাম্মদপুর থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো কারণে সে রকম কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

জাগো নিউজ : রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে মোহাম্মদপুর অন্যতম। এ থানা এলাকায় অপরাধের ধরণগুলো কেমন?
 
জামাল উদ্দিন মীর : এখানকার অপরাধের সংখ্যা সীমিত। উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড হচ্ছে না। তবে, ভোর বেলার দিকে কিছু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চলছে। বেশ কয়েকজনকে ধরে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নিয়েছি।
 
জাগো নিউজ : বড় কোনো ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে যদি বলেন?
 
জামাল উদ্দিন মীর : বড় কোনো মামলা বা ঘটনা আমার সময়ে ঘটেনি বললেই চলে। মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উদ্যানে একটি খুনের ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
 
জাগো নিউজ : অভিযোগে আছে থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) হলে পুলিশের কোনো তৎপরতা থাকে না। তাহলে কী জিডি করে পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ?
 
জামাল উদ্দিন মীর : পুলিশ সদস্য হিসেবে আমাদের কাজই সাধারণ মানুষকে সার্ভিস দেয়া। আমি থানায় আসার পর অনেক ঘটনায় জিডি গ্রহণ করেছি। জিডি শুধু লিখলেই (নথিভুক্ত) হবে না, সে সম্পর্কে সার্বিক খোঁজ-খবর নেয়ার নির্দেশনাও রয়েছে।

Jalal-mir
 
জাগো নিউজ : মোহাম্মদপুর থানার কোন এলাকাকে অপরাধকর্মের দিক থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়?
 
জামাল উদ্দিন মীর : আমাদের থানা এলাকার অপরাধ মানচিত্র রয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা এলাকার প্রত্যেকটি স্থানই আমরা গুরুত্বসহ খোঁজ-খবর রাখি। তবে বছিলা, নূরহাজান রোড ও ঢাকা উদ্যান এলাকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলতে পারেন।
 
জাগো নিউজ : রাজনৈতিক কিংবা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কোনো চাপ রয়েছে কি-না?
 
জামাল উদ্দিন মীর : না রাজনৈতিক বা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কোনো চাপ নেই, তবে হুটহাট হিজবুত তাহরীর ঝটিকা মিছিল করে বলে অভিযোগ পাই। তাদের অপতৎপরতা নির্মূলে অভিযান চালিয়ে মাসখানেক আগে ৭/৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
 
জাগো নিউজ : থানার বর্তমান জনবল দিয়ে বড় ও ঘন বসতিপূর্ণ এলাকার মানুষের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সম্ভব হচ্ছে?
 
জামাল উদ্দিন মীর : কাজ করতে হবে এটাই বড় সত্যি। জনবল বেশি হলে কাজের সুবিধা হতো। ৭ লাখের মতো মানুষের বসবাস এখানে। সেখানে পুলিশ সদস্য মাত্র ৯০ জন। বাকিটা আপনিই বুঝে নিন।
 
জাগো নিউজ : থানার ওসি’র দায়িত্ব অনেক। ব্যস্ততাও কম নয়। সব মিলিয়ে কাজের বাইরে নিজের পরিবারকে কিভাবে সময় দেন?
 
জামাল উদ্দিন মীর : আসলে মানুষকে সেবা দেয়ার মানসেই এই পেশায় আমার আসা। ছোট বেলাতেই ইচ্ছে জেগেছিল পুলিশ কর্মকর্তা হবো। ওসির কাজের পরিধি ব্যাপক। ব্যস্ততার কারণে পরিবারকে চাহিদা মতো সময় দেয়া কঠিন। তবে পরিবার আমার পেশাগত ব্যস্ততা ও কাজের ধরণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আমি রাত তিনটায় বাসায় ফিরলেও পরিবারের কাছে সন্ধ্যার মতো।
 
জাগো নিউজ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

জামাল উদ্দিন মীর : আপনাকেও ধন্যবাদ।

জেইউ/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।