দুই ঘোষণায় যেন উবে গেছে করোনার ভয়, রাস্তায় বাড়ছে যানবাহন
সময় তখন বিকেল ৫টা। রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়। উচ্চশব্দে হর্ন বাজিয়ে ছুটে চলছে ছোট-বড় ট্রাক, লরি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত ও প্যাডেলচালিত রিকশা। যেন কার আগে কে যাবে প্রতিযোগিতা চলছে।
অথচ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাত্র কয়েক দিন আগেও এই মোড়ে পুলিশের জোরদার অবস্থানে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হতো। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়তে থাকলেও সেখানে আজ এসবের বালাই নেই।
ঢাকা কলেজের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা গেল। এলিফ্যান্ট রোডের সামনে পুলিশের একটি ভ্যান গাড়ি দেখা গেলেও বাহিনীর সদস্যদের সেখানে দেখা গেল না। তারা অদূরে দাঁড়িয়ে খোশগল্প করছিলেন। কয়েক দিন আগেও তারা সারাদিন ছুটে মাইকিং করে ঘরে থাকার কথা বলেছেন নগরবাসীকে।
আগামী ১০ মে থেকে সীমিত আকারে শপিং ও দোকানপাট খোলা এবং আগামীকাল ৭ মে থেকে সারাদেশে মসজিদে জামাতে সবার নামাজ আদায়ের সুযোগের দুই ঘোষণায় নগরবাসীর মন থেকে যেন করোনাভাইরাসের ভয় নিমিষে উবে গেছে!
বিকেলে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিগত ৫৮ দিনের তুলনায় আজ দিনভর রাজধানীজুড়ে মানুষের ও যানবাহন চলাচল ছিল অনেক বেশি। নিউমার্কেটের সামনে গত ২৬ মার্চের পর থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগ এলাকায় যাতায়াতকারী) সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকলেও আজ থেকে বেশ কয়েকটি অটোরিকশাকে যাত্রী ডাকতে দেখা গেল।
রমিজ মিয়া নামের এক অটোরিকশা চালক জানান, গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে গাড়ি বন্ধ থাকায় না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। তাই আজ গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন। তবে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম।
তিনি জানান, তাদের গাড়িতে সাধারণত নিউমার্কেট এবং বিভিন্ন এলাকার মার্কেট ও গার্মেন্টস কর্মীরা যাতায়াত করেন। বেশিরভাগ মানুষ বন্ধে বাড়ি চলে যাওয়ায় এখনো তেমন যাত্রী পাচ্ছেন না। আগামী ১০ মে মার্কেট খুললে আয়-রোজগার ভালো হবে বলে মনে করছেন রমিজ মিয়া।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফলমূল, শাকসবজি এমনকি বিভিন্ন পোশাক বিক্রেতা হকারদেরও রাস্তাঘাটে পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এমইউ/এইচএ/এমএস