কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪০ পিএম, ০১ মে ২০২০

দেশের বৃহত্তম কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদনকেন্দ্র বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) বগুড়া শিল্পনগরীতে কৃষি যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য হালকা প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। হাওর অঞ্চলসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় বোরো মৌসুমের ধান দ্রুত ঘরে তুলতে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এ শিল্পনগরীর কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে।

বিসিকের সূত্র জানা যায়, বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীতে বিভিন্ন ধরনের ৪৫টি হালকা প্রকৌশল শিল্পকারখানা রয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবজনিত পরিস্থিতিতে বিসিকের সার্বিক সহায়তা ও তত্ত্বাবধানে বর্তমানে এই শিল্প নগরীতে ৩৫টি শিল্প কারখানা চালু রয়েছে এবং গড়ে দৈনিক ১ কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি উৎপাদিত হচ্ছে। এসব খুচরা যন্ত্রাংশ সমগ্র দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটানে রফতানি হয়ে থাকে।

বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা এ কে এম মাহফুজুর রহমান জানান, দেশের কৃষি যন্ত্রাংশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করে থাকে বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী। কৃষিসহ বিভিন্ন খাতের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কারখানাগুলোতে প্রতিদিন কৃষি যন্ত্রাংশ যেমন -সেন্টিফিউগাল পাম্প, পিস্টন, টিউবওয়েল, সিএনজি অটোরিকশার ও জুটমিলের খুচরা যন্ত্রাংশ, মোটরসাইকেলের ব্রেক ড্রাম, নাট, বল্টুসহ অন্যান্য হালকা প্রকৌশল যন্ত্রাংশ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবছর ভ্যাট ও ট্যাক্সবাবদ ১৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকে। এ শিল্পনগরীতে প্রায় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

এ শিল্পনগরীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিলটন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের প্রোপ্রাইটর মো. আজিজার রহমান মিলটন জানান, দেশের কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বিসিকের সার্বিক সহযোগিতায় তার প্রতিষ্ঠানে দৈনিক ৩০০ জন শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৫ টনের অধিক সেন্টিফিউগাল পাম্প, পিস্টন, টিউবওয়েলসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন করছে। এগুলোর মূল্য আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা।

তিনি আরও বলেন, তার প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রাংশ দেশে বাজারজাতকরণের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোয় রফতানি হয়ে থাকে। তবে, করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে রফতানি বন্ধ আছে।

উল্লেখ্য, সারাদেশে হালকা প্রকৌশল যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৬৪ সালে ১৪ দশমিক ৬০ একর জায়গা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী। স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তোদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৮০ সালে আরও ১৮ দশমিক ৬৭ একর জমিতে সম্প্রসারণ করে বতর্মানে ৩৩ দশমিক ১৭ একর ভূমির ওপর এ শিল্পনগরীর উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর শিল্পমালিক ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও ৩০০ একর আয়তনের আরেকটি বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। শিল্পনগরীটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সুষ্টি হবে এবং সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাৎসরিক রাজস্ব আয় হবে বলে জানান শিল্পনগরীর কর্মকর্তারা।

এমইউএইচ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।