‘সাগর থেকে বারবার উদ্ধার করলে বাকি রোহিঙ্গাদেরও পাঠাবে মিয়ানমার’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৭ এএম, ০১ মে ২০২০

বাংলাদেশ বারবার সাগর থেকে রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করলে মিয়ানমার সেদেশে থাকা বাকি রোহিঙ্গাদেরও একইভাবে বাংলাদেশ পাঠানোর আশকারা পাবে বলেছেন নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়নমন্ত্রী সিগরিড কাগ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে এ কথা বলেন এই ডাচমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়নমন্ত্রী সিগরিড কাগ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আলোচনা করার জন্য টেলিফোন করেন। টেলিফোনালাপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাগরে ভেসে থাকা ৫০০ রোহিঙ্গার বিষয়ে ডাচমন্ত্রীকে ব্যাখ্যা দেন। ড. মোমেন বলেন, দুই নৌকায় ভেসে থাকা ৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে তো নয়ই; এমনকি সীমানার কাছেও নেই। সমুদ্র আইন অনুযায়ী অঞ্চলের বাকি দেশগুলোরও এ রোহিঙ্গাদের নিয়ে দায়িত্ব রয়েছে।

এ সময়ে ডাচমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশ বরাবরই রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে আসছে। আর এটি ভবিষ্যতে মিয়ানমারকে আরও রোহিঙ্গাদের গভীর সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করবে। এ সময়ে রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য ডাচমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

ইতোমধ্যে করা ক্রয়াদেশ বাতিলের ফলে বাংলাদেশে প্রায় ২৩ লাখ শ্রমিক ও ১১৫০টি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় ড. এ কে আবদুল মোমেন তৈরি পোশাকশিল্পের ক্রয়াদেশ বাতিলের বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন ইউরোপীয়ান ব্র্যান্ড এবং ক্রেতা ইতোমধ্যে ৩১৮ কোটি ডলারের আদেশ বাতিল করেছে। যার কারণে ১১৫০টি কারখানা এবং প্রায় ২৩ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময়ে ডাচমন্ত্রীকে নেদারল্যান্ডসের ক্রেতা ও ব্র্যান্ডরা যাতে বাংলাদেশে তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল না করে তার নিশ্চয়তার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময়ে ডাচমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের ক্রেতা ও ব্র্যান্ডের ক্রয়াদেশ বাতিল হবে না বলে আশ্বাস দেন।

আলাপকালে ডাচমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে ইউরোপীয় ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাকশিল্প পণ্যের অর্ডার বাতিল করছেন। এ সময়ে এ থেকে উত্তরণের বিষয়ে আলাপ করেন দুই মন্ত্রী।

ডাচ সরকার কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সহযোগিতার জন্য ১০ কোটি ইউরো ডলারের তহবিল তৈরি করেছে বলেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান ডাচমন্ত্রী। যারা এ তহবিল থেকে সহযোগিতা চায়, তাদের এজন্য আবেদন করতে হবে বলে জানান তিনি।

আলাপকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে, কোভিড-১৯-এর কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে ১১ লাখ ২০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক তাদের কাজ হারিয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে দুটি সুনির্দিষ্ট অনুরোধ করেছে। যেসব বাংলাদেশিরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের চাকরি হারিয়েছে, তারা যাতে অনাহারে মারা না যায়, আর তাদের ছয় মাসের বেতন যাতে দেয়া হয়- এ দুটি ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষে রাজি করাতে ডাচমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত ডাচ রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলাপ করবেন বলে জানিয়েছেন ডাচমন্ত্রী।

জেপি/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।