অভিযোগের পরও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন চেয়ারম্যানরা : সুমন
এবার দেশের ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অনেক হতাশা, অনেক অভিযোগের মধ্যেও দেশের বেশিরভাগ চেয়ারম্যানই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি লাইভে বলেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাহেব বাড়ির দিঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন লাইভের শুরুতে বলেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অনেক কথাই শোনেন তাদের বিষয় ভালো কথাও শোনেন মন্দ কথা শোনেন। এ রকম মহামারির সময়ও চালচোর অনেক চেয়ারম্যান মেম্বার ও নেতৃবৃন্দ কথা শুনেছেন। ঠিক একই সময়ে আমার নিজের এলাকার হবিগঞ্জের পইল ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মুখোমুখি। এই চ্যানেলের কথা বলতে গিয়ে আমি আগে বলতে চাই, অনেক হতাশার মধ্যেও আমরা কিছু আলো দেখতে পাই, এ রকম একজন আলোকিত মানুষের মুখোমুখি হচ্ছি এখন। আমি তার মুখে কিছু কথা শুনতে চাই।
তার কাছে যাওয়ার আগে বলেন, উনি হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি আমাদের হবিগঞ্জ আলোকিত মানুষ। যিনি এই উপজেলায় চারবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম সৈয়দ আহমদুল হক। এর মধ্যে কয়েকবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমি আজ তারই ছেলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।
এ পর্যায়ে সুমন পইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফের সাথে কথা বলে জানান, মরার আগে বিভিন্ন মানুষের বিচারের মীমাংসার এবং জমা রাখা ৩২ কোটি টাকার হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক ও তার উত্তরসূরী ছেলে। তিনি যার যা টাকা আছে সব সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন। এখনও বর্তমানে তার ছেলে চেয়ারম্যানের কাছে বিচারের টাকা প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা জমা আছে।
সুমন বলেন, আমি এই পর্যায়ে আপনার কাছে জানতে চাই, আপনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যানের উত্তরসূরী হিসেবে বলেন- আপনার এলাকার মানুষের প্রতি দায় কতটুকু। চেয়ারম্যান বলেন, এটা আমার ওপর দায়িত্ব এসে পড়েছে। আমার বাবা অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আমিও চেষ্টা করছি যদিও আমি ওনার মতো হতে পারব না। আমার জানামতে আমার বাবার কাছে মানুষ ২০ কোটি টাকা পেত। যদিও পেপার-পত্রিকায় ৩২ কোটি টাকার কথা এসেছে।
চেয়ারম্যান বলেন, আমি আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করছি। এখন বাকি দায়িত্ব আমার ওপর এসে পড়েছে। বাবার মৃত্যুর পর অলরেডি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা আমি মানুষকে দিয়েছি। এটা সমগ্র জেলার সাথে জড়িত।
সুমন বলেন, বাংলাদেশের অনেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ পর্যন্ত রয়েছে। আপনার বক্তব্য কী? জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, দেশে প্রায় ৫৪ হাজারের মতো চেয়ারম্যান রয়েছে। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন প্রায় দুইশর মতো হবে চাল বা ত্রাণ চুরি করেছে। আর বাকি বা বৃহৎ অংশই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে আমার মনে হয়। আমি আমার বাবার কাজ দেখে অনুভব করতে পারি। যারা হাতেগোনা কয়েকজন এসব কাজ করছেন তারা সুযোগসন্ধানী। এদের নির্বাচিত করার আগে আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার। বাকি ৫৩ হাজার কিন্তু নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, কিন্তু এখন করোনার মধ্যে একটা সুযোগ এসেছে মানুষের জন্য কিছু করার। যে সুযোগটা আমি নিচ্ছি। ভবিষ্যতে হয়তো এই মহামারি আর আসবে না। তাই মানুষের সেবার সুযোগ আসবে না। যারা এই মহামারির সময় সুযোগটা নিচ্ছেন ওনাদের মানবিকতা এবং মনুষ্যত্ব নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। এটা একটা সুযোগ এসেছে প্রতিটি মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আল্লাহ হয়তো মানবসেবার সুযোগ করে সৌভাগ্য দিয়েছে।
সুমন বলেন, বাংলাদেশে যত সাহেব আছেন, চৌধুরী আছেন সৈয়দ আছেন তারা সকলেই যেন বাংলাদেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ান। যারা ভালো মানুষ আছেন, তারা মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই মানুষের প্রত্যাশা।
লাইফের শেষ পর্যায়ে বিদায় নেয়ার আগে সুমন বলেন, অনেক হতাশার কথা আসবে অনেক অভিযোগের কথা আসবে, বেশিরভাগ স্থানীয় প্রতিনিধি চেষ্টা করে যাচ্ছেন মানুষের জন্য কাজ করবার। এই মহামারির পর আরও মহামারি আসতে পারে। প্রতি ক্ষেত্রে আমরা একত্রে কাজ করতে চাই।
এফএইচ/বিএ