দেশে কোটিপতির সংখ্যা ৪৫ হাজার
ক্রমেই বড় হচ্ছে দেশের অর্থনীতির আকার। একই সঙ্গে বাড়ছে দেশের কোটিপতির সংখ্যা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেব অনুসারে ৩ মাসের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ৬৩৫ জন। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১ কোটি টাকার ওপরে আমানত রেখেছেন এমন গ্রাহক রয়েছেন ৪৫ হাজার ৬৯৮ জন। ৩ মাস আগে মার্চে এ সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৬৩ জন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর শেষে এ সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৮০৮। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ৪৫ হাজার কোটিপতি আমানতকারী দেখানো হলেও এর বাইরে কোটি টাকার সম্পদের মালিক রয়েছেন আরও কয়েক লাখ। যারা ব্যাংকের বাইরেও আমানত রেখেছেন। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডেভেলপার কোম্পানিসহ নানা কোম্পানিতেও রয়েছে কোটি কোটি টাকার আমানত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাংকে আমানতকারীর অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৫০ কোটি টাকার ওপরে রয়েছে এমন আমানতকারীর সংখ্যা ৫৭৫ জন। ৪০ কোটি টাকার ওপরে রয়েছে ২০১ জন। ৩৫ কোটি টাকার ওপরে আমানত রেখেছেন ১৬৯ জন। ৩০ কোটি টাকার ওপরে রেখেছেন ২২৪ জন। ২৫ কোটি টাকার ওপরে রয়েছে এমন আমানতকারীর সংখ্যা ৩০৬ জন। ২০ কোটি টাকার ওপরে রয়েছে ৫২৫ জন গ্রাহকের। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে ৯৩৮ জনের। ১০ কোটি টাকার ওপরে আমানত রেখেছেন ২ হাজার ৬৪ জন। ৫ কোটি টাকার বেশি আমানতকারী রয়েছেন ৬ হাজার ৮১৬ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের আগস্ট মাসে সঞ্চয়ের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ১৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৭০ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে সঞ্চয় কমেছে ১ হাজার ৫৫ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কাছে ৪০ শতাংশের বেশি সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ায় আয় বৈষম্য বেড়েছে। তাই ধনী-গরিবের বৈষম্যও বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এক গভর্নর বলেন, সম্পদের অসম বণ্টন ও অবৈধ আয়ের উৎসের কারণে আয় বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সম্পদ ক্রমেই কিছুসংখ্যক লোকের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার মধ্যেও কোটিপতিদের একটি বড় অংশ বছরের পর বছর রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন, যা দেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
জেডএইচ/এআরএস/এমএস