স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অজ্ঞতাবশত ভুল বলিয়াছে: ডা. জাফরুল্লাহ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখন পর্যন্ত অনুমোদন না দেয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আবিষ্কৃত র্যাপিড কিটস পরীক্ষার আপাতত কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন, ‘একবারে ভুল কথা বলছে। অজ্ঞতাবশত তাহারা ভুল কথা বলিয়াছে। তারা নিজেদের জ্ঞানের অভাবে অন্যের শেখানো বুলি বলেছেন। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কোনো ওষুধ বা এ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতির নিবন্ধন অনুমোদন দেয় না। সেটা তাদের দায়িত্ব না।’
সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, ‘ওষুধ বা যন্ত্রপাতির অনুমোদনের দায়িত্ব নিজ নিজ দেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ভারতসহ অন্যান্য দেশের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেয়। আমাদের বাংলাদেশেও আমাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ওষুধ প্রশাসন আছে অনুমোদন দেয়ার জন্য। অবশ্য ডব্লিউএইচওর কিছু গাইডলাইন ও তথ্য আছে। তবে তারা কোনো কিছুর রেজিস্ট্রেশন দেয় না।’
তিনি বলেন, ‘এটা পরীক্ষার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুরোধ করতে হবে সরকারের। আমাদের ওষুধ প্রশাসন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে যদি বলে, পরীক্ষা করে এটার কোয়ালিটি দেখেন, তারা করে দেবে। এই চিঠি লেখার দায়িত্ব হলো ওধুষ প্রশাসন অধিদফতরের।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের অনুমোদন বাংলাদেশ সরকার না দিলেও একই জাতীয় কিটের অনুমোদন ভারত সরকার দিয়েছে বলেও জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তার বক্তব্য, ‘গতকাল এটা অনুমোদিত হয়ে গেছে। আমাদের না, এই জাতীয় জিনিস। একই জাতীয় জিনিস তারা বের করে ফেলছে। যত দেরি করতেছে, অন্যরা এটা দখল কইরা ফেলতেছে। ইরানে এই ধরনের টেস্ট কিট প্রত্যেক দিন ১০ লাখ ব্যবহার করে। ইরান অত্যন্ত শিক্ষিত একটা দেশ।’
‘দুই লাইনের একটা চিঠি দিচ্ছে না ওষুধ প্রশাসন’
এদিকে রোববার (২৬ এপ্রিল) কিট জমা দিতে গেলে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর তা না নেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেই প্রেক্ষিতে সোমবার ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ডিজির অভিযোগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ওধুষ প্রশাসনসহ এ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনকে হেয়-প্রতিপন্ন করছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেই সঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন ডিজি।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘অকারণে এটাকে তারা (ওধুষ প্রশাসন অধিদফতর) ঘোলাটে করতেছে। আমার দাবি তো খুব সোজা। আমি একটা দুই লাইনের চিঠি চাচ্ছি। তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) লিখবে, ‘আপনারা অনুগ্রহ করিয়া গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত কিটের তুলনামূলক কার্যকারিতা পরীক্ষা করিয়া একটা দ্রুত রিপোর্ট দেন।’ এই একটি চিঠিই আমি চাচ্ছি। চিঠির একটা কপি আমাদের দেবে এবং ওদেরকে এড্রেস করে আরেকটা চিঠি দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন এই চিঠিটাই দিচ্ছে না। যাতে তাদের ইম্পোর্টার্স লবি সুবিধা পায়। আমাদের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ১৫ লাখ কিট আমদানি হইছে। আরও হইতেছে। তবে আমি কোনো মধ্যস্বত্বভোগীকে পয়সা দেব না। সরকারের ফি যেটা আছে, সেটা দেব।’
পিডি/এমএফ/পিআর