করোনার মৌলিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা নেই উপকূলের ৪৯ ভাগ মানুষের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০২০

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে একেবারেই ধারণা নেই উপকূলের ৪৯ ভাগ নিম্নবিত্ত মানুষের। ৭৪ শতাংশ মানুষ জানেনই না সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং এর সেবা সম্পর্কে।

করোনাভাইরাস বিষয়ে উপকূল অঞ্চলের মানুষের মাঝে পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে। এ জরিপটি পরিচালনা করে উপকূলে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট। তবে সংস্থাটি এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে।

কক্সবাজার ও ভোলা জেলায় দৈবচয়নের মাধ্যমে বাছাইকৃত নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে এই জরিপ পরিচালনা করে কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ।

জরিপ সম্পর্কে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘উপকূলের দরিদ্র মানুষ কীভাবে এ বিপর্যয় মোকাবিলা করছে তা জানার জন্যই কোস্ট এই গবেষণা করেছে। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে উপকূলের নিম্ন আয়ের মানুষের প্রস্তুতি কেমন, কতটা সঠিক তথ্য তারা জানেন এবং সর্বোপরি কতটুকু তারা মানছেন বা মানতে পারছেন তা জানাই ছিল এই গবেষণার উদ্দেশ্য।’

গবেষণায় উত্তরদাতাদের মধ্যে নারী ছিলেন ৪৭ শতাংশ এবং পুরুষ ৫৩ শতাংশ। উত্তরদাতা নারীদের ৮০ ভাগ গৃহিণী এবং বাকিরা শিক্ষার্থী বা পড়াশোনার বাইরে থাকা কিশোরী ও বৃদ্ধা। এছাড়াও ১০ ভাগ কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ ১৮ ভাগ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ১৯ ভাগ এবং ১৩ ভাগ জেলে ছিলেন। জরিপের জন্য উপকূলের দুইটি জেলা হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রভাবিত কক্সবাজার এবং দ্বীপ জেলা ভোলা বাছাই করা হয়। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন চর হিসেবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এবং ভোলার চর মোতাহার এলাকাও ছিল।

সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনাভাইরাস যেহেতু স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ কারণে সরকারি বেসরকারি সকল প্রচারণায় নিয়মিত হাত ধোয়া এবং এর নিয়মকানুন সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তারপরও এই জরিপে দেখা গেছে, ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা হাত ধোয়ার মৌলিক বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না। ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা হাত ধোয়ার বিষয়টি মেনে চলতে পারছেন না।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কীভাবে ছড়ায়- এমন প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায়, ২৬ শতাংশ মানুষের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক তথ্য ও লক্ষণ সম্পর্কে অবগত নন। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায়, ৬৪ শতাংশ উত্তরদাতা টিস্যু বা রুমাল অথবা কনুইয়ের ভাঁজের কথা উল্লেখ করেন। বাকি ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা এ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না।

প্রায় শতভাগ গৃহিণী উত্তরদাতা জানান, তারা করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতা বিষয়ক তথ্য সরাসরি পাননি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে যারা বাইরে যান, তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জেনেছেন।

এফএইচএস/এফআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।