সা’দত হুসাইনের মৃত্যুতে বিশিষ্টজনদের শোক
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. সা’দত হুসাইনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশমন্ত্রী শাহাবউদ্দীন এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়াও শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টি মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার পৃথক শোক বার্তায় সা’দত হুসাইনের বিদেহী আত্মার পরলৌকিক শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) এক শোক বার্তায় ওবায়দুল কাদের ড. সা’দত হুসাইনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, সা’দত হুসাইন ছিলেন আমার এক সময়ের সহকর্মী ও সহযোদ্ধা। তিনি অত্যন্ত সৎ ও দৃঢ়চিত্তের অধিকারী ছিলেন। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সরকারি আইন ও বিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতেন।
ড. মোমেন সা’দাত হুসাইনের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
আরেক শোক বার্তায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, ‘ড. সা’দত হুসাইন ছিলেন দেশের একজন প্রাজ্ঞ ও দক্ষ আমলা। কর্মজীবনে তার কর্তব্যনিষ্ঠা ও সুনাম জাতি দীর্ঘকাল স্মরণে রাখবে। তার মৃত্যু দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’
শোক বার্তায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, প্রয়াত সা’দত হুসেইন ছিলেন একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক। যৌবনে সাহসিকতার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারে কাজ করেছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজের প্রতীক হয়ে থাকবেন ডক্টর সা’দত হুসাইন।
জিএম কাদের বলেন, ‘ড. সা’দত হুসাইন ভীতি ও লোভকে উপেক্ষা করে কাজ করার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে নতুন প্রজন্মের সামনে। ড. সাদত হুসাইনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন অকৃত্রিম অভিভাবক হারালো।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নোয়াখালীর কৃতি সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ভারতে প্রবাসী সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী মুক্তিযোদ্ধা এবং সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইনের মৃত্যুতে তার পরিবারবর্গের মতো আমিও গভীরভাবে শোকাহত ও ব্যথিত হয়েছি। আমি তার আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।’
ফখরুল বলেন, ‘মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন একজন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হয়েও স্বাধীন মত প্রকাশে কখনোই দ্বিধান্বিত হতেন না। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন ঋজু ও নির্ভিক। তিনি কথা বলার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন এবং নিজ মতামত প্রকাশে ছিলেন নির্ভয় ও অবিচল। স্বাধীনচেতা, স্পষ্টভাষী, নম্রতা, বিনয়, সৌজন্য ও সহিষ্ণুতা ছিল তার সহজাত। এই সব বৈশিষ্ট্যের কারণেই সরকারের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সর্বমহলে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন। তার সততা ও নিষ্ঠা ছিল ঈর্ষণীয় উচ্চতায়। সেই কারণেই পেশাগত জীবনে সরকারি সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থেকেও তিনি তার কর্তব্যকর্ম থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হননি। তার মৃত্যু নিঃসন্দেহে জাতির জন্য মর্মস্পর্শী।’
উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা ড. সাদত হুসাইন (৭৩) বুধবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (ব্রেন স্ট্রোক) এর পাশাপাশি কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন।
এমইউএইচ/এইউএ/জেপি/এফএইচএস/এমএফ/জেআইএম/এমএস