জমানো টাকা দিচ্ছে না পোস্ট অফিস, ভোগান্তির শিকার গৃহবধূ
রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ নাসরিন গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমানো টাকা তুলতে প্রতিদিন নিউমার্কেট পোস্ট অফিসে যাচ্ছেন। প্রায় ৪৫ হাজার টাকা জমা থাকলেও পোস্ট অফিস কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে টাকা দিচ্ছেন না। প্রতিদিনই বাসা থেকে বাজারের ব্যাগ ও টাকা তোলার পাস বইটি নিয়ে বের হয়ে আসেন। কিন্তু টাকা তুলতে না পারায় খালি ব্যাগ নিয়েই প্রতিদিন বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।
বুধবার দুপুরে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে গৃহবধূ নাসরিন বলেন, দুদিন পর রমজান শুরু হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামীর আয়-রোজগার বন্ধ। চার সদস্যের পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এ অবস্থায় পোস্ট অফিসে জমানো ৪৫ হাজার টাকাই শেষ পুঁজি। কিন্তু পোস্ট অফিস থেকে টাকা দিচ্ছে না।
তিনি জানান, গত মাসে লকডাউনের কয়েকদিন আগে তিনি সবশেষ টাকা জমা দেন। এরপর গত ২ এপ্রিল টাকা তুলতে নিউমার্কেট পোস্ট অফিসে যান। পোস্ট অফিসের ভেতরে কাজ হলেও তিনি বারবার নক করার পরও দরজা খোলেনি কেউ। দুই-তিনদিন এভাবে প্রতিদিন নক করার পর একদিন দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলেও কর্তব্যরত কর্মকর্তা তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
একপর্যায়ে তাকে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে টাকা তুলতে হলে গুলিস্তান জিপিও পোস্ট অফিস থেকে বড় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কিছু কাগজপত্র স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে আসতে হবে। বেশ কয়েকদিন ঘোরাঘুরি করে তাদের কথামতো প্রযোজনীয় কাগজপত্রের ফরোয়ার্ডিং নিয়ে এলেও তাকে টাকা দেয়া হচ্ছে না। বুধবারও তিনি পোস্ট অফিসে গেলে তাকে টাকা না দিয়ে উল্টো জিপিও কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেয়া হয়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নাসরিন বলেন, ঘরে বাজার-সদাই কিছুই নেই। আমার জমানো টাকা আমাকে দেয়া হচ্ছে না। দুদিন পর রমজান শুরু। কিছু ইফতারসামগ্রী কেনা জরুরি হলেও টাকা তুলতে না পারায় খালি ব্যাগ হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে।
এসব কষ্টের কথা কার কাছে বললে সমাধান পাবেন তা জানতে চাইছিলেন ভোগান্তির শিকার এই গৃহবধূ।
এমইউ/বিএ