জলবায়ু অর্থায়নে চাপে বাংলাদেশ : টিআইবি


প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৫

শিল্পোন্নত দেশসমূহ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ হিসাবে জলবায়ু তহবিল শুধুমাত্র সরকারি উৎস হতে অনুদান হিসেবে দেয়ার কথা থাকলেও কপ-২১ এর খসড়া চুক্তির অনুচ্ছেদের ৬ এ ঋণকেও অর্থায়নের উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জলবায়ু অর্থায়নে এ ধরণের অনৈতিকতার কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো চাপে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ২৭ (পুরাতন) ধানমন্ডিস্থ মাইডাস সেন্টার (লেভেল-৫), কনফারেন্স কক্ষে  আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে টিআইবি।

আগামী ৩০ নভেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২১ উপলক্ষে জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে টিআইবি’র অবস্থানপত্রে একথা জানিয়েছে টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন (সিএফজি) এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন খান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।

জলবায়ু তহবিলকে লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবহার অনৈতিক উল্লেখ করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোনো কোনো শিল্পোন্নত দেশ সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ ভূমিকা পালন করছে।
 
ক্ষতিপূরণ বাবদ সেসব দেশের প্রতিশ্রুত তহবিল ও অর্থায়নে নতুন তহবিল দেয়ার কথা। কিন্তু তা না করে প্যারিস বৈঠকে ‘দুষণকারী দেশ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ’ নীতি অবলম্বন না করে উন্নয়ন সহায়তা ‘অতিরিক্ত’ ও ‘নতুন’ অনুদান বাদ দিয়ে ঋণ হিসেবে ডায়ভার্ট করছে যা কোনোভাবে মানা যায় না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অভিযোজন কার্যক্রমের জন্য ২০১৫-২০৩০ সাল সময়ে প্রাক্কলিত সর্বমোট ৪০ বিলিয়ন ডলারের (গড়ে প্রতি বছর ২.৫ বিলিয়ন ডলার) বিপরীতে ২০১০ অর্থ বছর হতে ২০১৫ এর আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১.০৭৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) এবং শিল্পোন্নত দেশসমূহের অর্থে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্স ফান্ড (বিসিসিআরএফ) গঠিত হলেও দু’টো তহবিলেই বরাদ্দ ক্রমেই আশঙ্কাজনক হারে কমায় অভিযোজনের লক্ষ্যে অর্থ সরবরাহে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

শুধু তাই নয়, বিসিসিটিএফ হতে গত ৬ বছরে অনুমোদিত ২৩৬টি সরকারি প্রকল্পের মধ্যে মাত্র ৮৪টির কার্যক্রম (৩৬%) সমাপ্ত হয়েছে, ৮৫টি প্রকল্প ২০০৯ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এসব প্রকল্পের মাত্র ২০% কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে, অথচ এরই মধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ তহবিল উত্তোলিত হয়েছে। বিসিসিআরএফ এ বরাদ্দকৃত প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলারও সরকার ব্যবহার করতে পারছে না বলে জানা যায়।
 
পাশাপাশি প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা,আর্থিক,পরিবেশগত ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদন্ড নিশ্চিত না করায় জিসিএফ হতে সরাসরি তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হচ্ছেনা। এসব কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো চাপের মধ্যে রয়েছে।

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২১ উপলক্ষে জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে একটা শক্ত অবস্থান নিতে হবে। এ জন্য তিনি সদ্য চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীকে যথযাথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

জেইউ/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।